ফের একজোট হওয়ার পথে জয়ললিতার এডিএমকে। পনীরসেলভম শিবিরের সঙ্গে সমঝোতার পথেই এগোচ্ছে শশিকলা-দিনকরণ শিবির।
তার ইঙ্গিত মিলল রাতে বিদ্যুৎমন্ত্রী কে থঙ্গমণির বাড়িতে দীর্ঘ দেড় ঘণ্টার বৈঠকে। তার আগেই পনীর বার্তা দেন ঐক্যের। যাকে স্বাগত জানান লোকসভার ডেপুটি স্পিকার থাম্বিদুরাই-সহ একাধিক প্রথম সারির এডিএমকে নেতা। থঙ্গমণির বাড়িতে বৈঠকের পরে অর্থমন্ত্রী ডি জয়কুমার জানান, দলের দুই গোষ্ঠীকে মিলিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। বস্তুত পনীরের মুখে ঐক্যের ডাকে যে ভাবে শশিকলা-শিবির সাড়া দিয়েছে, তাতে দিনকরণ গোষ্ঠীর কাছে সমঝোতার বার্তা মেনে নেওয়া ছাড়া অন্য পথ নেই বলেই ধারণা এডিএমকে সমর্থকদের।
দল ভাঙার আশঙ্কা তো রয়েইছে। তার উপর নির্বাচন কমিশনকে ঘুষ দিয়ে প্রভাবিত করার অভিযোগে শশিকলার ভাইপো টিটিভি দিনকরণের বিরুদ্ধে আজ মামলা করেছে দিল্লি পুলিশ। সব মিলিয়ে তামিল রাজনীতিতে এই মুহূর্তে রীতিমতো কোণঠাসা শশিকলা ও দিনকরণের শিবিরের। অবস্থা যা, তাতে শেষ পর্যন্ত শশী-শিবির মাথা নত না করলে দলের কয়েক জন মন্ত্রী-সহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকেই পলানীস্বামীর সঙ্গে হাত মেলাবেন।
সব মিলিয়ে জল যে কার্যত নাকের উপর দিয়ে বইছে, তা বুঝতে পেরেই আজ শশিকলার সঙ্গে দেখা করতে বেঙ্গালুরুর জেলে পৌঁছে যান দিনকরণ। কী ভাবে ভাঙন রোখা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয় দু’জনের মধ্যে। যদিও সরকারি ভাবে এটিকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলেছেন দিনকরণ।
শশিকলা জেলে থাকায় বর্তমানে ওই গোষ্ঠীর দল পরিচালনা করার দায়িত্ব তাঁর ভাইপো দিনকরণের কাঁধে। দলের সাধারণ সম্পাদক দিনকরণের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে গত কয়েক মাসে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যাতে ইন্ধন দিয়েছে আজকের ঘটনা।
তার আগে গত কাল রাতে রণকৌশল ঠিক করতে বৈঠকে বসেন পনীর ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা। সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে, এডিএমকে-র প্রতিষ্ঠাতা এম জি আরের জন্মদিন কী ভাবে পালন করা হবে, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। যদিও পনীরসেলভম গোষ্ঠী সূত্রে খবর, শশী শিবিরের কোন কোন নেতা-বিধায়ক তাঁদের সঙ্গে যোগ দিতে চাইছেন এবং তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে।
আজ শশিকলা গোষ্ঠীর উপর চাপ বাড়িয়েছে দিল্লি পুলিশ। গত কাল রাতে দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে সুকেশ চন্দ্রশেখর নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ১.৩০ কোটি টাকা। পুলিশি জেরায় সুকেশ জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে পরিচয় থাকার সুবাদে মোট পঞ্চাশ কোটি টাকার বিনিময়ে তিনি শশিকলা গোষ্ঠীকে দলের মূল প্রতীক চিহ্ন জোড়া পাতা পাইয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। অভিযোগ, তার প্রথম কিস্তি হিসাবে ওই টাকা সুকেশকে দিয়েছিলেন দিনকরণ। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, ওই মামলায় অভিযুক্ত দিনকরণকেও তদন্তের জন্য ডাকা হবে।