গিলানির সেই পথসভায় পাকিস্তানের পতাকা হাতে সমর্থকরা। বুধবার শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই।
গত মাসেই তাঁকে জেল থেকে ছাড়া নিয়ে তোলপাড় হয়েছে জাতীয় রাজনীতি। বুধবার সেই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসারত আলমকে পাকিস্তানের পতাকা হাতে দেখা গেল হুরিয়ত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলি শাহ গিলানির পথসভায়। পাকিস্তানের পক্ষে স্লোগানও দেন মাসারত।
পাঁচ বছর পর এ দিন শ্রীনগরে পথসভা করলেন গিলানি। পথসভায় যোগ দেন গিলানির অনুগামী, হুরিয়তের অন্যান্য নেতা-সহ হাজার হাজার মানুষ। এর আগে ২০১০ সালে শ্রীনগরেই একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছিলেন গিলানি। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়েছিল অশান্তি। প্রাণ গিয়েছিল ১০০-রও বেশি মানুষের। আর এই বিক্ষোভ মিছিলের কারণেই জেলে যেতে হয়েছিল মাসারতকে।
তার পর পাঁচ বছর কোনও সভা করেননি গিলানি। তিন মাস পরে দিল্লি থেকে ফিরে এ দিন আবার একটি পথসভা করেন তিনি। সেখানে গিলানিকে অভ্যর্থনা জানান তাঁর অনুগামী এবং হুরিয়ত নেতারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মাসারতও। সভায় হুরিয়ত সমর্থকদের হাতে
ছিল দলের পতাকা। তার পাশেই গিলানির বহু অনুগামীর হাতে উড়তে দেখা যায় পাকিস্তানের পতাকা। পথসভায় শোনা যায় পাকিস্তান এবং স্বাধীনতার পক্ষে স্লোগান। পাকিস্তানের পতাকা হাতে ভারত-বিরোধী স্লোগান দেন মাসারতও।
সেই মাসারত ৭ মার্চ যাঁকে জেল থেকে মুক্তি দেয় জম্মু-কাশ্মীরের পিডিপি-বিজেপি সরকার। ভূস্বর্গে সরকার গঠনের পর পরই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের পাশাপাশি সমালোচনায় মুখর হয় সঙ্ঘ এবং এনডিএ-র শরিকরাও। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে মাসারতকে জেল থেকে ছাড়ার প্রতিবাদ জানায় বিজেপিও। গোটা ঘটনার দায় বিজেপি নেতারা চাপিয়ে দেন পিডিপি-র উপর। এ দিনের ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা আরপিএন সিংহ বলেন, ‘‘বিজেপি এবং পিডিপি মাসারত আলমকে জেল থেকে ছেড়েছিল। সেই মাসারতের মুখেই আজ ভারত-বিরোধী স্লোগান শোনা গিয়েছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’ মাসারত কাণ্ডের নিন্দা করেছে বিজেপিও। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশের মাসারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ অবশ্য মাসারতের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
পথসভায় বেশ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই বক্তৃতা দেন গিলানি। তিনি বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে যা চলছে, তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।’’ কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জম্মু-কাশ্মীরে ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গে আরএসএসের সমালোচনা করে গিলানি বলেন, ‘‘আরএসএস জম্মু-কাশ্মীরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করতে চাইছে। এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার জন্য শীঘ্রই একটি আলোচনাসভার আয়োজন করা হবে।’’