National News

গিলগিটে জলাধার প্রকল্প থেকে চিনকে বাদ দিতে চাইছে পাক সরকার!

চিনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড কর্মসূচির আওতায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জলাধার তৈরির কথা ছিল। সেই প্রকল্প থেকে এ বার চিনকেই বাদ দিতে চাইছে পাকিস্তান।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৪
Share:

দিয়ামের-ভাষা জলাধার প্রকল্প থেকে চিনকে যদি বাদ দেয় পাকিস্তান, তা হলে গোটা সিপিইসি প্রকল্পেই তার প্রভাব পড়তে পারে। মনে করছেন চিনা কূটনীতিকরা। —প্রতীকী ছবি / ফাইল চিত্র।

অপ্রত্যাশিত ধাক্কা খেল বেজিং। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চিনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে জলাধার তৈরি করতে রাজি নয় ইসলামাবাদ। চিনকে ওই প্রকল্প থেকে পাকিস্তান বাদ দিতে চাইছে। খবর পাক মিডিয়া সূত্রের।

Advertisement

পাকিস্তানের জাতীয় আইনসভা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকে সে দেশের ‘ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, চিনের দেওয়া শর্ত মেনে যৌথ উদ্যোগে দিয়ামের-ভাষা জলাধার প্রকল্প তৈরি করা সম্ভব নয়। পাক সংবাদপত্র ‘এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ সূত্রে এই খবর পাওয়া গিয়েছে। চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডরের (সিপিইসি) অংশ হিসেবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বাল্টিস্তান এলাকায় যে দিয়ামের-ভাষা জলাধার তথা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে চিন, সেই প্রস্তাব মেনে জলাধার তৈরি হলে পাকিস্তানকে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে ইসলামাবাদ মনে করছে। চিনকে বাদ দিয়ে পাকিস্তান একাই ওই জলাধার প্রকল্প তৈরি করবে বলে শাহিদ খকন আব্বাসির সরকার সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছে বলে ওই সংবাদপত্র সূত্রে খবর।

পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বাল্টিস্তানের মধ্যে দিয়েই গিয়েছে চিনের কাশগড় থেকে পাকিস্তানের গ্বাদর পর্যন্ত বিস্তৃত সিপিইসি। চিনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড কর্মসূচির আওতায় নির্মিত সিপিইসি-তে শুধু সড়ক বা পরিবহণ পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে না, রয়েছে অনেক আনুসঙ্গিক প্রকল্পও। গিলগিট-বাল্টিস্তানের দিয়ামের জেলায় দিয়ামের-ভাষা জলাধার প্রকল্পও সেগুলিরই অন্যতম। কিন্তু এই জলাধার তথা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির জন্য যে সব শর্ত পাকিস্তানের উপর চাপিয়েছে চিন, তা ইসলামাবাদের একেবারেই পছন্দ নয় বলে জানা যাচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: সু চি-র জবাব, নরম টিলারসন

দিয়ামের-ভাষা জলাধার প্রকল্প নিয়ে ভারতের তীব্র আপত্তি রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ওই প্রকল্পের জন্য ঋণ দিতে রাজি হয়নি। চিন চাইছে, চিনা সংস্থাগুলির থেকে ঋণ নিয়েই ওই প্রকল্পে বিনিয়োগ করুক পাকিস্তান। পাক মিডিয়া সূত্রের খবর, প্রকল্পটি গড়ে তুলতে চিনা সংস্থাগুলি পাকিস্তানকে যে সব শর্ত দিচ্ছে, তাতে প্রকল্পের সম্ভাব্য খরচ ৫০০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে পৌঁছে যাবে ১৪০০ কোটি ডলারে। এই ব্যয়ভার বহন করা ইসলামাবাদের পক্ষে খুবই কঠিন। তাই আন্তর্জাতিক শর্তাবলী এবং চিনের দাবিদাওয়া মেটাতে পাকিস্তান রাজি নয়। আন্তর্জাতিক মতামতের তোয়াক্কা না করে সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে দিয়ামের-ভাষা প্রকল্প রূপায়ণের কথাই ইসলামাবাদ ভাবতে শুরু করেছে বলে খবর।

পাকিস্তানের ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান মুজাম্মিল হুসেইনকে উদ্ধৃত করেছে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিকে মুজাম্মিল বলেছেন, ‘‘দিয়ামের-ভাষা জলাধার প্রকল্পে অর্থ জোগানোর জন্য চিন যে সব শর্ত রাখছে, সেগুলে মেনে নেওয়া সম্ভব নয় এবং তা পাকিস্তানের স্বার্থ বিরোধী।’’ পাক সংবাদপত্রে এ কথা লেখা হয়েছে। চিনকে বাদ দিয়ে পাকিস্তানের একার উদ্যোগে ওই প্রকল্প গড়ে তোলার প্রস্তাব ইতিমধ্যেই পাক প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসির অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে বলেও পাবলিক অ্যাকাউন্স কমিটিকে জানিয়েছেন মুজাম্মিল।

আরও পড়ুন: বৈঠকে মোদী-লি, উত্তেজনা কমাতে চায় বেজিং-দিল্লি

চিন বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। দিয়ামের-ভাষা জলাধার প্রকল্প থেকে চিনকে বাদ দিতে চাইছে পাকিস্তান, এমনটা চিনা কূটনীতিকরা মানতেও চাইছেন না। সিপিইসি-র অন্তর্ভুক্ত একটি প্রকল্পকে একতরফা ভাবে সিপিইসি-র বাইরে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত পাকিস্তান কখনওই নেবে না বলে তাঁরা মনে করছেন। দিয়ামের-ভাষা জলাধার প্রকল্প নিয়ে চিন যে সব শর্ত পাকিস্তানের সামনে রেখেছে, তা নিয়ে যদি আপত্তি থাকত, তা হলে ইসলামাবাদ সে কথা সর্বাগ্রে চিনকেই জানাত, মনে করছে বেজিং।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement