হিমাচল প্রদেশের রাজভবনে রাখা সেই টেবিলে নেই পাকিস্তানের পতাকা। ছবি: পিটিআই।
শিমলার রাজভবনের ‘কীর্তি হল’ থেকে সরল পাকিস্তানের পতাকা। ১৯৭২ সালে শিমলা চুক্তি সই করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জ়ুলফিকর আলি ভুট্টো।
শিমলার রাজভবনের ‘কীর্তি হল’-এ লাল রঙের একটি মঞ্চে রাখা রয়েছে চকচকে পালিশ করা সেই কাঠের টেবিল। তার চারপাশে রয়েছে শিকলের বেড়া। সেই টেবিলেই শিমলা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এত দিন সেই টেবিলে ভারত ও পাকিস্তানের পতাকা ছিল। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরানো হয়েছে পাকিস্তানের পতাকা।
পহেলগাঁও হামলার পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে ভারত। সিন্ধু জল চুক্তিও বাতিল ঘোষণা করেছে। পাল্টা পাকিস্তানও কিছু সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে। প্রয়োজনে শিমলা চুক্তির স্থগিত রাখা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামাবাদ। তার পরেই শিমলার রাজভবনে রাখা ওই টেবিল থেকে সরিয়ে দেওয়া হল পাকিস্তানের পতাকা।
টেবিলের পিছনে এখনও রাখা রয়েছে দু’টি চেয়ার। সেই চেয়ারে বসেই দুই দেশের প্রধান সই করেছিলেন শিমলা চুক্তি। টেবিলের উপরে এক ধারে রয়েছে চুক্তি সই করার সেই ছবি। ১৯৭২ সালে ভারত-পাকিস্তান সম্মেলনের আরও কিছু ছবি ঝুলছে টেবিলের পিছনের দেওয়ালে। এত দিন টেবিলের উপর ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশের পতাকাই ছিল। এ বার যদিও সরিয়ে দেওয়া হল পাকিস্তানের পতাকা।
শিমলা চুক্তি কী?
১৯৭১ সালের মার্চে মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেয় বাংলাদেশ। যুদ্ধের পরে ওই বছরেরই ১৬ ডিসেম্বর ৯০ হাজার পাকিস্তানি সেনা পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)-এ আত্মসমর্পণ করেন। পূর্ব পাকিস্তানের পাশাপাশি পশ্চিম সীমান্তেও ভারতীয় সেনার সঙ্গে লড়াই চলছিল পাক সেনার। পূর্বে পাক সেনার আত্মসমর্পণের পরে পশ্চিম সীমান্তেও যুদ্ধবিরতি হয়। জন্ম হয় স্বাধীন বাংলাদেশের।
১৯৭২ সালের ৩ জুলাই শিমলা চুক্তি সই করেন ইন্দিরা এবং জুলফিকর। চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যাবতীয় সংঘাত শেষ করে সীমান্তে শান্তি স্থাপন করা এবং দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও সম্প্রীতির সম্পর্ক গড়ে তোলা। শিমলা চুক্তির মাধ্যমেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) নির্ধারিত হয়েছিল। অতীতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ বার বার উঠেছে। এ বার তা স্থগিত করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের তরফে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরে ভারতও কড়া পদক্ষেপ করেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানি নাগরিকদের দেওয়া ভিসা বাতিল করেছে। তাঁদের দেশ ছাড়ার সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।