এত দিন ঝোলার মধ্যে ছিল। এ বার তার থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে। দূতাবাস কর্মীদের পারস্পরিক হেনস্থা নিয়ে যে ভাবে আসরে নেমেছে ভারত আর পাকিস্তান, তাতে এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।
পাক কূটনীতিকরা ভারতে হেনস্থা হচ্ছেন, এই অভিযোগের জেরে আজ নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত সোহেল মামুদকে দেশে ফিরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে পাক সরকার। তিনি পাকিস্তান চলেও গিয়েছেন। পরিস্থিতি এই মুহূর্তে এতটাই তিক্ত যে, জল কত দূর গড়াবে বোঝা যাচ্ছে না। তবে আজ ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে ইঙ্গিত, পাক সরকারের সঙ্গে অন্তত এই বিষয়টা নিয়ে মিটমাট করে নিতেই চাইছে সাউথ ব্লক। পরিস্থিতি কিছুটা লঘু করতে চেয়ে সাউথ ব্লক বলেছে, পাক রাষ্ট্রদূতের ইসলামাবাদ যাওয়াটা আদৌ ‘ফেরত যাওয়া’ নয়। নেহাতই রুটিন সফর।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমারের কথায়, ‘‘আমি তো কিছুটা অবাকই হচ্ছি যে পাক হাইকমিশনারের ইসলামাবাদ যাওয়াকে কেন ফেরত চলে যাওয়া হিসাবে দেখা হচ্ছে। সব দেশের রাষ্ট্রদূতরাই সময়ে সময়ে নিজের দেশের হেড কোয়ার্টারে যান।’’
তবে বিষয়টি নিয়ে তিক্ততা যে যথেষ্টই তৈরি হয়েছে, সেটা রবিশের কথা থেকেও স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, ‘‘পাকিস্তান যে বিষয়গুলি তুলছে, তা আমরা দেখেছি। তবে আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে উত্তর দিতে চাই না। তার জন্য নির্দিষ্ট কূটনৈতিক পন্থা রয়েছে।’’ দিল্লিতে তাদের কূটনীতিকরা হেনস্থার শিকার হচ্ছেন বলে কয়েক দিন আগেই পাকিস্তান অভিযোগ করেছিল। পাকিস্তানি ডেপুটি হাইকমিশনারের গাড়িকে ধাওয়া করা হয়েছে, তাঁকে রাস্তায় গালিগালাজ করা হয়েছে বলে দাবি। স্কুলে যাওয়ার পথে দিল্লিতে হেনস্থার শিকার হয়েছে পাক কূটনীতিকদের সন্তানরাও, নয়াদিল্লির পাক দূতাবাস এমন অভিযোগও করেছে। এ ব্যাপারে একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করা হয়েছে পাকিস্তানের তরফ থেকে।
রবিশ এ দিন যোগ করেন, ‘‘ইসলামাবাদে আমাদের হাইকমিশনও নানা রকম সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু আমরা সেগুলি কূটনৈতিক চ্যানেলে জানিয়েছি, মিডিয়ায় নয়। আমাদের দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে পাক সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা চাই কোনও রকম হেনস্থা এবং বিরোধিতা ছাড়া ভিয়েনা কনভেনশনের রীতি মেনে সবাই যেন কাজ করতে পারেন।’’
তবে দূতাবাস সঙ্কট মেটাতে চাইলেও সন্ত্রাস প্রসঙ্গে যে সুর নরম করা হবে না, সেটাও এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছে ভারত। সন্ধের এক অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, ‘‘পাকিস্তানে জঙ্গিরা যে রাষ্ট্রের মদতে পুষ্ট আর জঙ্গিদের সঙ্গে পাক সেনার যে ষড় রয়েছে, সে কথা আর একেবারেই গোপন নেই। পাকিস্তানকে এর সমুচিত জবাব পেতে হবে।’’