নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন পাকিস্তানের। —ফাইল চিত্র।
জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন অব্যাহত রাখল পাকিস্তান। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর এই নিয়ে টানা ছ’দিন। পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতও।
সেনার তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোরের মধ্যে ভারত-পাক নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে জম্মু ও কাশ্মীরের নওশেরা, সুন্দরবানী এবং আখনুর সেক্টরে গুলি চালায় পাক সেনা। বিনা প্ররোচনায় নিয়ন্ত্রণরেখার অপর প্রান্ত থেকে গুলি চালানো হয়। সেনা সূত্রে খবর, গুলি চলে কুপওয়ারা এবং বারামুলা জেলাতেও। তার পরেই পাক সেনাকে গুলির মাধ্যমেই ‘মসৃণ’ জবাব দেয় ভারতীয় সেনা।
সোমবার রাতে কাশ্মীরের কুপওয়ারা এবং বারামুলা জেলার কাছে নিয়ন্ত্রণরেখার অপর প্রান্ত থেকে বিনা প্ররোচনায় গুলিবর্ষণ শুরু করে পাকিস্তানি সেনা। কাশ্মীরের আখনুর সেক্টরের বিপরীত প্রান্ত থেকেও গুলি চালায় পাক ফৌজ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারতের তরফে পাল্টা জবাব দেওয়া হয়।
মনে করা হচ্ছে জঙ্গিদের নিরাপদে পাকিস্তানে ফিরিয়ে নিয়ে যেতেই এই কৌশল অবলম্বন করছে ইসলামাবাদ। নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি চালিয়ে ভারতীয় সেনাকে ব্যতিব্যস্ত রেখে মুহূর্তের অসতর্কতায় নজর এড়িয়ে জঙ্গিদের ফিরিয়ে নিতে চাইছে। তবে এমন কৌশলের কথা মাথায় রেখে সজাগ রয়েছে ভারতীয় সেনাও।
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। ভারত-পাক কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাশ্মীর উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উত্তাপও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন শুরু করে পাকিস্তানি সেনা।
বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের পর ভারতের বিরুদ্ধেও পাল্টা বেশ কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করে পাকিস্তান। তারা হুঁশিয়ারি দেয়, জলপ্রবাহ বন্ধ করা হলে সেটিকে ‘যুদ্ধ’ হিসাবে দেখা হবে। পাকিস্তান আরও দাবি করে, শিমলা চুক্তি স্থগিত করারও অধিকার রয়েছে তাদের। বস্তুত, ১৯৭২ সালে এই শিমলা চুক্তির মাধ্যমেই কাশ্মীর উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণরেখা তৈরি হয়েছিল। চুক্তি অনুসারে, ওই সময়ে যে দেশের বাহিনী কাশ্মীরের যেখানে অবস্থান করছিল, সেখানেই অবস্থান করবে। অতীতেও বিভিন্ন সময়ে সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানি সেনার বিরুদ্ধে।