সোমবার সোনমার্গে হামলাস্থলে সেনা টহল। ছবি: পিটিআই।
জম্মু ও কাশ্মীরের গন্ডেরবাল জেলার সোনমার্গে সন্ত্রাসী হামলার দায় নিল ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামে এক জঙ্গিগোষ্ঠী। উল্লেখ্য, এই গোষ্ঠী পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার শাখা। রবিবারের হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আট জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাত জনই পরিযায়ী শ্রমিক। বাকি এক জন চিকিৎসক।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনমার্গে জঙ্গি হামলার ছক কষেছিলেন টিআরএফ প্রধান শেখ সাজ্জাদ গুল। কাশ্মীরে অন্যতম সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন এই টিআরএফ। গত দেড় বছরে কাশ্মীরি পণ্ডিত, শিখ এবং স্থানীয় নন, এমন ব্যক্তিদের উপর হামলা চালিয়েছে তারা। তবে রবিবারের হামলায় শুধু অ-কাশ্মীরি নন, কাশ্মীরিও প্রাণ হারিয়েছেন। অনেকের মতে, টিআরএফ তার কৌশল পরিবর্তন করছে। যা সোনমার্গের হামলার ঘটনা থেকে স্পষ্ট।
গন্ডেরবালে জ়ি মোড় সুড়ঙ্গ পথের কাজ চলছে। কাশ্মীরে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে এই সুড়ঙ্গপথ তৈরি করছে কেন্দ্র। তুষারধস প্রবণ রাস্তার বিকল্প হিসাবে এই সুড়ঙ্গপথটি তৈরি করা হচ্ছে। রবিবার সন্ধ্যায় আচমকাই নির্মাণস্থলে কয়েক জন জঙ্গি এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় কর্মরত শ্রমিকদের শরীর। ওই নির্মাণস্থলে ছিলেন এক চিকিৎসকও। তিনি ওই নির্মাণদলের সদস্য। তাঁর শরীরেও গুলি লাগে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ওই চিকিৎসকের।
পুলিশ আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় কাজ সেরে নিজেদের ক্যাম্পে ফেরার সময়ই হামলার ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। বিশেষ দল গঠন করে তদন্ত করছে তারা। সোমবারই সেই দল ঘটনাস্থলে পৌঁছবে। হামলার নেপথ্যে স্থানীয় কারা যুক্ত রয়েছেন, তার খোঁজ শুরু করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।
বিধানসভা নির্বাচন মেটার পর এই প্রথম কোনও বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটল উপত্যকায়। ওই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। নিরস্ত্র মানুষদের উপর এই হামলাকে ‘জঘন্য এবং কাপুরুষোচিত’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবারও জঙ্গি হামলায় এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল উপত্যকায়। সেটা ছিল সোপিয়ানে। বিহার থেকে কাজ করতে আসা এক শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা।