পাক হামলায় ক্ষতবিক্ষত বাড়ি। পুঞ্চের মেন্ধর সেক্টরে। পিটিআই
গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভারতকেও লড়তে হচ্ছে করোনা-অতিমারির সঙ্গে। এই সময়েও ভারতীয় সেনাকে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে পাক জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। জঙ্গি অনুপ্রবেশ রোখার এই লড়াইয়ে প্রযুক্তি এখন ভারতের বড় হাতিয়ার। ত্রিস্তরীয় সুরক্ষা বলয়ের প্রতিটি ধাপে ব্যবহার হচ্ছে প্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন সরঞ্জাম।
গিরিপথগুলিতে এখন বরফ গলতে শুরু করেছে। নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়ছে। আজও বিকালে কুপওয়ারায় নিয়ন্ত্রণরেখার ও-পার থেকে বিনা প্ররোচনায় গুলি চালাতে শুরু করে পাক বাহিনী। এতে তিন জন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। চৌকিবালে নিহত হয়েছেন বছর সাঁইত্রিশের শামিমা বেগম ও বছর ষোলোর জাভেদ আহমেদ খান। তিমুনায় মৃত্যু হয়েছে বছর আটের জ়িশান বশিরের। পুঞ্চেও গোলাগুলি চালিয়েছে পাক বাহিনী।
উত্তর কাশ্মীরে মোতায়েন সেনাকর্তারা আশঙ্কা করছেন, আগামী ক’মাসে জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা আরও বাড়বে। ১৫ কোরের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল বি এস রাজুর কথায়, ‘‘জওয়ানরা নিরন্তর নজরদারি চালাচ্ছেন বটে, তবে জঙ্গিদের ছক ভেস্তে দিতে প্রতি মরশুমেই কৌশল বদলাতে হয় আমাদের। আরও ভাল ফল পেতে অনুপ্রবেশরোধী ব্যবস্থাকে আরও নিশ্ছিদ্র করার কাজ তাই শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ, এক বার ঢুকে পড়তে পারলেই এই জঙ্গিরা আমজনতার মধ্যে মিশে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়।’’
জঙ্গিরা ভারতে অনুপ্রবেশের সময় এখন ভৌগোলিক অবস্থান জানার ব্যবস্থা জিপিএস ব্যবহার করছে। সেনা সূত্রের খবর, এদের মোকাবিলায় সেনাও এখন আগের চেয়ে ঢের বেশি উন্নত প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে। ত্রিস্তরীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘লং রেঞ্জ রেকনাইস্যান্স অ্যান্ড অবজ়ারভেটরি সিস্টেম (এলওআরআরওএস)’। যা কেরন, টংধর, মাচিল, গুরেজ় ও উরি সেক্টরে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় থাকা জঙ্গিদের গতিবিধি জানতে সাহায্য করছে। এই ব্যবস্থাকে এ বার আরও মজবুত করা হচ্ছে।
তিন স্তরের ব্যবস্থাটি এই রকম: প্রথম স্তর একেবারে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর। দ্বিতীয় স্তরটি নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে একটু ভিতরে। সেখানে সেনা ও বিএসএফ সদা সজাগ রয়েছে ড্রোন ও থার্মাল ইমেজার নিয়ে। তৃতীয় স্তরটি রয়েছে উপত্যকায়। যেখানে সেনা, আধাসেনা ও পুলিশ যৌথ ভাবে কাজ করছে।
গোটা ব্যবস্থায় কাজে লাগানো হচ্ছে খুবই উচ্চ ক্ষমতার সেন্সর, রেডার, ক্যামেরা, অপটিক্যাল ফাইবার কেবল। ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালানো কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক। কেরনে সাফল্য এসেছে ড্রোন ব্যবহার করে। এগুলি জঙ্গিদের অবস্থান নিখুঁত ভাবে জানিয়ে দিচ্ছে। এতে জঙ্গিদের মোকাবিলায় কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকছে সেনাবাহিনী। এটাই শেষ নয়। আকাশ থেকে নজর রাখার জন্য তীক্ষ্ণদৃষ্টির ক্যামেরা লাগানো (মাইক্রো-অ্যারোস্ট্যাট) বেলুনও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)