তিহাড়ে প্রথম রাতে ঘুম হল না চিদম্বরমের

সিবিআই হেফাজত থেকে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে যাওয়া-আসার পথে কী ভাবে তিনি হাতের পাঁচ আঙুল দেখিয়ে জিডিপি ৫ শতাংশে নেমে আসা নিয়ে কটাক্ষ করলেন, তা নিয়ে সিবিআই অফিসারদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৫
Share:

পি চিদম্বরম। ফাইল চিত্র।

জেলের খাটে প্রথম রাতে ভাল ঘুম হল না পি চিদম্বরমের। কিন্তু জেলে গিয়ে তিনি সিবিআই অফিসারদেরও স্বস্তিতে থাকতে দিলেন না।

Advertisement

সিবিআই হেফাজত থেকে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে যাওয়া-আসার পথে কী ভাবে তিনি হাতের পাঁচ আঙুল দেখিয়ে জিডিপি ৫ শতাংশে নেমে আসা নিয়ে কটাক্ষ করলেন, তা নিয়ে সিবিআই অফিসারদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল।

গত মঙ্গলবার চিদম্বরমকে যখন আদালত থেকে বার করে সিবিআই হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সে সময় ‘পাঁচ শতাংশ, জানেন তো পাঁচ শতাশ কী?’ বলে মন্তব্য করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালত থেকে বার করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে প্রায় ১৮ জন অফিসারের একটি দল চিদম্বরমকে ঘিরে ছিল। সাংবাদিকরা মোবাইলে ভিডিয়ো তোলার চেষ্টা করলে ধাক্কা মেরে মোবাইল ফেলে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তাঁরা। তা সত্ত্বেও চিদম্বরম বলে যান, ‘আমি শুধু দেশের অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত।’

Advertisement

সূত্রের খবর, এর পরেই উপরমহল থেকে আর্থিক অপরাধ দমন শাখায় সরকারি মেমো পাঠিয়ে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিহাড় জেলে পাঠানো হয়েছিল চিদম্বরমকে। জেল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে কাঠের তক্তপোশে ভাল ঘুম হয়নি চিদম্বরমের। সারারাত এ পাশ-ও পাশ করেই কেটে যায়। সকালে জেলের উঠোনে হাঁটাহাঁটি করেন তিনি। ভোর ছ’টায় চা, সামান্য জলখাবার খেয়ে প্রথমে কিছু ধর্মের বই পড়েন তিনি। তার পর খবরের কাগজ নিয়ে বসেন। এর পর তাঁর ছেলে কার্তি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান। পরে মুকুল ওয়াসনিক, পি সি চাকো-র নেতৃত্বে কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দলও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে তিহাড়ে যায়। কিন্তু দেখা করার সময় পেরিয়ে যাওয়ায় জেলের সুপারের কাছে খোঁজখবর করেই কং‌গ্রেস নেতারা ফিরে আসেন। কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছেন, দল যে পুরোপুরি চিদম্বরমের পাশে রয়েছে তা বোঝাতে সনিয়া গাঁধীর নির্দেশেই তাঁরা তিহাড়ে গিয়েছিলেন।

চিদম্বরমের জন্য বৃহস্পতিবার একমাত্র স্বস্তির কারণ ছিল, দিল্লিরই বিশেষ আদালতের বিচারক ও পি সাইনি তাঁকে ও কার্তিকে এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় জামিন দিয়েছিলেন। আজ বিচারক সাইনি এই মামলার শুনানি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রেখেছেন। বিচারক রায়ে জানিয়েছেন, সিবিআই-ইডি মিলেই আদালতকে জানিয়েছে তারা এই তদন্তে নতুন নথি আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছে। বিভিন্ন দেশের কাছে তথ্য চেয়ে লেটার রোগেটরি পাঠানো হয়েছে। তাই আদালতের সময় বাঁচাতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য শুনানি স্থগিত রাখা হল। সরকারি সূত্রের খবর, সিবিআই তথা ইডি বিচারক সাইনির আদালতে এই মামলা নিয়ে এগোতে চাইছে না। তিনি চলতি মাসের শেষেই অবসর নেবেন। বিচারক সাইনি এই মামলার
তদন্ত নিয়ে সিবিআই, ইডি-র সমালোচনা করেছিলেন। এই মামলার তদন্তের মধ্যেই বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে ১০ কোটি টাকা জমা দিতে হয়েছিল কার্তিকে। এখন সেই টাকা ফেরত চাইলেও আজ সুপ্রিম কোর্ট সেই আর্জি খারিজ করে জানিয়েছে, আরও তিন
মাস ১০ কোটি টাকা ‘ফিক্সড ডিপোজিট’ হিসেবে জমা থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement