—প্রতীকী চিত্র।
দেশের মধ্যে ২৭০ র্যাঙ্ক করেও নিজের অসতর্কতায় আইআইটি বম্বের আসন হাতছাড়া হয়ে গেল তরুণের।
রোল নম্বর চেক করতে গিয়ে ভুলবশত আসন ছেড়ে দেওয়ার অপশনটিতে ক্লিক করে ফেলেন তিনি। তাতেই ওই আসনটি হাতছাড়া হয়ে যায় তাঁর। তা নিয়ে আইন আদালতের চক্কর কাটছেন ওই তরুণ। কিন্তু এ ব্যাপারে তাঁদের কিছু করার নেই বলে ইতিমধ্যেই হাত তুলে নিয়েছেন আইআইটি বম্বে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার এ নিয়ে চূড়ান্ত রায় শোনাবে সুপ্রিম কোর্ট। প্রশ্ন উঠছে, অনলাইনে অনবধানবশত কোনও ভুল করলে তা শোধরানোর উপায় নেই কেন।
আগরার বাসিন্দা বছর ১৮-র সিদ্ধান্ত বাত্রাকে একা তাঁর মা বড় করে তুলেছেন। কিন্তু দু’বছর আগে আচমকাই তাঁর মৃত্যু হয়। তার পর থেকে দাদু-দিদা এবং মামার সঙ্গেই থাকেন সিদ্ধান্ত। পিতৃ-মাতৃহীন হওয়ায় সরকারের কাছ থেকে বিশেষ ভাতাও পান তিনি। মেধাবী ছাত্র সিদ্ধান্ত এ বছর আইআইটি-তে ভর্তির জন্য জেইই (অ্যাডভান্স) পরীক্ষায় বসেন। তাতে ২৭০ র্যাঙ্ক করে গত ১৮ অক্টোবর আইআইটি বম্বে-তে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে একটি আসন পেয়ে যান তিনি।
আরও পড়ুন: কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে মধ্যরাতে অমিতের বৈঠক, সিল করা হল দিল্লির সীমানা
রোল নম্বর আপডেট হয়েছে কি না দেখতে এর পর ৩১ অক্টোবর ফের জেইই (অ্যাডভান্স) ওয়েবসাইেট ঢোকেন সিদ্ধান্ত। সেখানেই ভুলবশত পরবর্তী রাউন্ডের আগে আসন ‘উইথড্র’ করার জায়গাটিতে ক্লিক করে ফেলেন। ১০ নভেম্বর ভর্তি হওয়া ৯৩ জন পড়ুয়ার তালিকায় নিজের নাম দেখতে না পেয়ে টনক নড়ে তাঁর। তার পর আসন ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আইআইটি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যখন ‘উইথড্রল লেটার’ পান, তড়িঘড়ি আদালতে ছুটে যান।
ওই ‘উইথড্রল লেটার’-কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রথমে বম্বে হাইকোর্টে যান সিদ্ধান্ত। ১৯ নভেম্বর বিষয়টি নিয়ে আইআইটি কর্তৃপক্ষকে দু’দিনের মধ্যে জবাব জানাতে বলে আদালত। দেরিতে নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শেষ হতে তখনও দু’দিন বাকি। কিন্তু ২৩ নভেম্বর সিদ্ধান্তের আবেদন খারিজ করে দেয় আইআইটি। আইআইটি রেজিস্ট্রার আর প্রেমকুমার জানান, উইথড্রল লেটার তুলে নেওয়া তাঁদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। ভর্তি সংক্রান্ত সব কিছু জয়েন্ট সিট অ্যালোকেশন অথরিটি (জোসা)-র হাতে। তা ছাড়া তাঁদের কাছে আর কোনও আসন খালি নেই। পরের বছর ফের পরীক্ষা দিতেই পারেন সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন: চিনে ব্রহ্মপুত্রের উপর তৈরি হচ্ছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, চাপ বাড়ছে ভারতের
কিন্তু এ ভাবের অসাবধানতার মাসুল দিতে হবে, তা মেনে নিতে পারেননি ওই তরুণ। বিষয়টি নিয়ে এর পর সুপ্রিম কোর্টে যান তিনি। শীর্ষ আদালতে তিনি জানান, আসন ‘ফ্রিজ’ হয়ে গিয়েছে অর্থাৎ আর পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার প্রয়োজন নেই বলে ভেবেছিলেন তিনি। পরবর্তী রাউন্ড থেকে সরে আসতেই তাই উইথড্রল অপশনটিতে ক্লিক করেছিলেন। কিন্তু আইআইটি কর্তৃপক্ষের যুক্তি, যাঁরা আসন ছেড়ে দিতে চান, তাঁদের জন্যই উইথড্র অপশনটি রাখা হয়েছে। চূড়ান্ত রাউন্ডের আগে তাতে ক্লিক করে কেউ আসন ছেড়ে দিতেই পারেন। সে ক্ষেত্রে আসন ধরে রাখার জন্য যে ফি নেওয়া হয়, তা থেকে ২০০০ টাকা কেটে নিয়ে বাকিটা ফেরত দেওয়া হয় পড়ুয়াকে।