আদানি কাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-র তদন্ত অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে বলে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির মনে করছে। প্রতীকী ছবি।
গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানি তাদের ‘প্রোমোটার গোষ্ঠী’র অংশ বলে আদানি গোষ্ঠী স্বীকার করে নিয়েছে। এর পরে আদানি কাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-র তদন্ত অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে বলে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির মনে করছে।
কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির আজ সংসদে সরাসরি নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ‘আদানি সরকার’ তকমা দিয়ে ‘আদানি সরকার হায় হায়’ বলে স্লোগান তুলেছে। সনিয়া, রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলের সাংসদেরা সংসদ চত্বরে গান্ধী-মূর্তির সামনে ধর্নায় বসে জেপিসি-র দাবি তুলেছেন। পাল্টা রাহুল গান্ধীকে নিশানা করেছে বিজেপি।
শাসক-বিরোধী চাপানউতোরের মাঝে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, শাসক ও বিরোধীরা যদি স্পিকারের সঙ্গে আলোচনায় বসে, তা হলেই অচলাবস্থা কাটতে পারে।
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে বলা হয়েছিল, শিল্পপতি গৌতম আদানির গোষ্ঠীর শেয়ারে তাঁর দাদা বিনোদের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ভুঁইফোঁড় সংস্থা লগ্নি করে আদানির শেয়ারের দর কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই সংস্থাগুলি মূলত বিদেশের বিভিন্ন করফাঁকির স্বর্গরাজ্যে তৈরি করা হয়েছিল। যাতে আদানিদেরই টাকা ঘুরপথে ফের আদানিদের শেয়ারে লগ্নি করে শেয়ার দর বাড়ানো যায়। আদানি গোষ্ঠীর এত দিন দাবি ছিল, তাদের কোনও শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত সংস্থার পদে নেই বিনোদ। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আদানি গোষ্ঠী বৃহস্পতিবার জানায়, বিনোদ তাদেরই ‘প্রোমোটার গোষ্ঠী’র অংশ। মালিকদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। কংগ্রেসের বক্তব্য, আদানি পরিবার ‘এনডেভার ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট’ নামক সংস্থা খুলে অম্বুজা সিমেন্টস ও এসিসি লিমিটেড অধিগ্রহণ করেছিল। তার লাভ গিয়েছিল বিনোদ ও রঞ্জনাবেন আদানির কাছে। বিনোদের সঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর সম্পর্ক না থাকলে এটা কী ভাবে সম্ভব?
কংগ্রেসের প্রশ্নের মুখে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা রাহুলকে নিশানা করেছেন। তাঁর অভিযোগ, রাহুল দেশবিরোধী শক্তির হাতিয়ার বা ‘অ্যান্টি-ন্যাশনাল টুলকিট’-এর পাকাপাকি অংশ হয়ে উঠেছেন। স্মৃতি ইরানি কর্নাটকে ভোটপ্রচারে গিয়ে বলেছেন, রাহুল বিদেশে গিয়ে দেশের অপমান করেছেন। কংগ্রেস যাতে একটিও ভোট না পায়, তার শপথ নিতে হবে। নড্ডার মন্তব্যের সমালোচনা করে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, “বিজেপি কোনও স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নেয়নি। তারা নিজেরাই দেশবিরোধী।”
সরকার রাহুলের ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে অনড় কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে অমিত শাহ অবশ্য বলেন, “দু’পা ওরা এগোক, দু’পা আমরা। তা হলেই অচলাবস্থা কাটবে বলে মনে করি। কিন্তু তা না করে যদি শুধু সাংবাদিক বৈঠকই হয়, তা পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হবে না।” এই অধিবেশনে অর্থবিল পাশ করানোর দায় রয়েছে সরকারের। সেই দায় থেকেই শাসক শিবির কিছুটা নরম মনোভাব নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।