—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সরকারি নথি বলছে, শুধু ২০২৩ সালেই ২ লক্ষ ১৬ হাজার ভারতীয় ভারতের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন। তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরকারকে আক্রমণে নামল কংগ্রেস এবং আপ। কংগ্রেসের দাবি, উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন এবং সম্পদশালী ভারতীয়রা যদি দেশ ছেড়ে যান, তা থেকে ‘অর্থনৈতিক প্রহসন’ তৈরি হবে। সরকারের রাজস্ব কমে আসবে।
ভারতীয়দের নাগরিকত্ব ত্যাগ নিয়ে আপ সাংসদ রাঘব চড্ডার এক প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যসভায় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ নিজেই লিখিত উত্তরে জানিয়েছেন, গত বছরে ২ লক্ষ ১৬ হাজার ভারতীয় নাগরিকত্ব ছেড়ে অন্য দেশে গিয়েছেন। রাঘব সেই উত্তর এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘ঘটনাটা স্তম্ভিত হওয়ার মতো।’’ ২০২২ সালে নাগরিকত্ব ছেড়েছিলেন ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৬২০ জন। ২০২১ সালে এক লক্ষ ৬৩ হাজার ৩৭০ জন, ২০২০ সালে ৮৫ হাজার ২৫৬ জন এবং ২০২৯ সালে এক লক্ষ ৪৪ হাজার ১৭ জন।
২০২৩ সালে ২ লক্ষ ১৬ হাজার নাগরিকত্ব ত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ দাবি করেছেন, ২০১১ সালে এই সংখ্যাটা ছিল এক লক্ষ ২৩ হাজার। অর্থাৎ বর্তমানে দ্বিগুণ সংখ্যক লোক দেশ ছাড়ছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন। জয়রামের দাবি, দেশে দক্ষ কর্মীর যেখানে অভাব, সেখান সুদক্ষ সুশিক্ষিতরা যদি দেশ ছাড়েন তার প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে। তা ছাড়া, জয়রামের কথায়, ‘‘এঁদের মধ্যে অনেকেই আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল। এ বছরের গোড়ায় একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছিল, গত তিন বছরে ১৭ হাজার কোটিপতি ভারত ছেড়েছেন।...আর কিছু যদি না-ও হয়, একটা অর্থনৈতিক প্রহসন তো ঘটবেই। আমাদের রাজস্বভান্ডার সঙ্কুচিত হবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই।’’
সরকার অবশ্য বিষয়টাকে নেতিবাচক ভাবে দেখছে না। বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সফল, সমৃদ্ধ এবং প্রভাবশালী অনাবাসীরা ভারতের জন্য সম্পদ। এতে ভারতের লাভই হবে।’’ কেন এত লোক নাগরিকত্ব ছাড়ছেন, সে প্রশ্নও রেখেছিলেন রাঘব। তার উত্তরে কীর্তিবর্ধন বলেছেন, ‘‘কারণগুলো ব্যক্তিগত।’’
জয়রাম রমেশ অবশ্য তা মনে করছেন না। তাঁর মতে, ভারতে কর্পোরেট দুনিয়াকে ঘিরে সামগ্রিক ভাবে ভীতির পরিবেশ তৈরি হয়েছে গত এক দশকে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্ব নীতিও নাগরিকত্ব ছাড়ার পিছনে অন্যতম কারণ বলে তাঁর ধারণা। ব্যবসায়ীরা অনেকেই সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ব্রিটেন-সহ নানা জায়গায় চলে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।