প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিন সংসদে প্রবেশের মুখে দাঁড়িয়ে পঁচাত্তরের জরুরি অবস্থার কথা স্মরণ করিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সংবিধান অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ বাদল অধিবেশনের সূচনার দিনেও তাঁর নিশানায় বিরোধী শিবির। সংসদে আলোচনা শুরুর আগেই তিনি রণক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিলেন বলে মত রাজনৈতিক শিবিরের। অধিবেশনে বিরোধীদের রণকৌশল স্থির করতে আজ সন্ধ্যায় কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের বাসভবনে বৈঠক করেন ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলির সংসদীয় নেতারা।
বিরোধীদের নিশানা করে আজ প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন যে, নতুন লোকসভার প্রথম অধিবেশনে তাঁকে ‘অসাংবিধানিক ভাবে চুপ’ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, “আপনারা নিশ্চয় দেখেছেন যে, নতুন লোকসভার প্রথম অধিবেশনে সরকারের স্বর কী ভাবে রুদ্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। যে সরকার দেশের ১৪০ কোটি মানুষের ভোটে জিতে এসেছে। চেষ্টা হয়েছিল আড়াই ঘণ্টা ধরে প্রধানমন্ত্রীকে চুপ করিয়ে রাখার। গত অধিবেশনে ওরা চেষ্টা করেছে আমাকে কথা বলতে না দিতে। দেশের মানুষ আমাদের এখানে পাঠিয়েছেন দেশের জন্য, দলের জন্য নয়। সংসদ দেশের, কোনও দলের নয়।”
সংসদ চত্বরে বক্তব্য রাখার সময় আজ মোদী এ-ও বলেন, গত এক দশকে অনেক সাংসদই নিজেদের লোকসভা কেন্দ্রের জন্য কথা বলার সুযোগ পাননি। এর দায় কার্যত বিরোধীদের একাংশের ঘাড়েই ঠেলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “২০১৪ সালের পর থেকে এমন অনেক সাংসদ ছিলেন, যাঁরা নিজেদের লোকসভা কেন্দ্রের জন্য কথা বলতে পারেননি। নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে সংসদকে সমৃদ্ধ করতে পারেননি। কারণ, কিছু দলের নেতিবাচক রাজনীতি সংসদের সময় নষ্ট করেছে।”
বিরোধীদের দোষারোপের পাশাপাশি, দেশের জন্য কাজ ও লড়াইয়ে প্রস্তুত হওয়ার কথা শুনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “আগামী পাঁচ বছর দেশের জন্য লড়তে হবে। উঠতে হবে দলগত রাজনীতির ঊর্ধ্বে। জানুয়ারি থেকে আমাদের যত সামর্থ্য ছিল, যত লড়াই করার ছিল, করেছি। সেই পর্ব (নির্বাচন) মিটেছে। এ বার নির্বাচিত প্রত্যেক জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব, আগামী পাঁচ বছর দেশের জন্য লড়াই করা।” সবাইকে এক হয়ে লড়তে হবে বলে বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “দলের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের জন্য নিজেদের সমর্পণ করুন।”