ছবি: সংগৃহীত।
সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্ব কার্যত বাতিল। জিরো আওয়ার থাকলেও তাতে মন্ত্রীদের উত্তর দেওয়ার রীতি নেই। বিরোধীদের হাতে অস্ত্র শুধু দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব, যেখানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মন্ত্রীকে সংসদের দুই কক্ষেই মৌখিক উত্তর দিতে হয়। বাদল অধিবেশনে তৃণমূল-সহ বিরোধীরা এই অস্ত্রটিকে কাজে লাগাতে চলেছে।
লোকসভার স্পিকারের কাছে তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন জিএসটি-ক্ষতিপূরণ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাবের নোটিস জমা দিয়েছেন। বঙ্গের শাসক সূত্রের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস, ডিএমকে, এনসিপি-সহ অন্তত ১০টি বিরোধী দলের সঙ্গে কথা হয়েছে তাদের। কংগ্রেস এবং বামেরাও এই বিষয়টি নিয়ে একই প্রস্তাব আনতে পারে বলে সূত্রের খবর। এই নোটিস গ্রাহ্য হলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে অধিবেশন কক্ষে এ ব্যাপারে জবাব দিতে হবে। ডেরেকের কথায়, “আসন্ন অধিবেশনে বিরোধীদের কাছে যা যা সংসদীয় কৌশল রয়েছে, তার মধ্যে একমাত্র এই দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাবটির মাধ্যমেই আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারব।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, এ বারের অধিবেশনে দলের লক্ষ্য, বাংলার বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে রাজনৈতিক আক্রমণ শানানো। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, জিএসটি-র ক্ষতিপূরণকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংসের এবং রাজ্যগুলির সঙ্গে সম্পর্ক নষ্টের অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘জিএসটি রূপায়ণ সারা বিশ্বের কাছে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সর্বোত্তম উদাহরণ। কিন্তু রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্নে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে কেন্দ্রের প্রতি রাজ্যগুলির বিশ্বাস যাতে না উঠে যায়, তা দেখুন।’ মমতার প্রস্তাব, কেন্দ্রই ধার করে রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিক। পরিবর্তে পাঁচ বছর পরেও কেন্দ্র যাতে সেস তুলতে পারে সে ব্যাপারে সহমত হতে পারে সমস্ত রাজ্য। রাজ্যগুলির ঘাড়ে ঋণের বোঝা না-চাপিয়ে কেন্দ্রই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করুক। একই দাবিতে মোদীকে চিঠি দিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
আরও পড়ুন: করোনা-রোগীকে ধর্ষণ, গ্রেফতার অ্যাম্বুল্যান্স চালক
সম্প্রতি জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছিল, এ বছর জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ লক্ষ কোটি টাকা মেটাতে হবে। তার মধ্যে সেস বাবদ ৬৫ হাজার কোটি টাকা উঠেছে। বাকি থাকছে ২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। করোনার কারণেই এই বিপুল ঘাটতি বলে কেন্দ্র জানাচ্ছে। বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, কেন্দ্রের টাকা নেই। ফলে ক্ষতিপূরণ মেটানো সম্ভব নয়। রাজ্যগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ধার করুক।