ফাইল চিত্র
দেশের পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উন্নয়নে ১০০ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বাধীনতা দিবসে লাল কেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতির পরেই অবশ্য নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই নিয়ে পর পর তিন বার পরিকাঠামো ক্ষেত্রে একই অর্থ বরাদ্দ করার কথা শোনালেন মোদী। তিনি কেন ‘মিথ্যে প্রতিশ্রুতি’ দিয়ে চলেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।
কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১০০ লক্ষ কোটি টাকার ‘গতি শক্তি মিশন’-এর কথা লাল কেল্লা থেকে ঘোষণা করেছেন মোদী। তাঁর দাবি, এই প্রকল্পের ফলে দেশে সার্বিক পরিকাঠামো যেমন গড়ে উঠবে, তেমনি যুব সমাজেরও কাজের সুযোগ মিলবে। কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম আজ মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৯ সালের ১৫ অগস্ট আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ১০০ লক্ষ কোটি টাকার পরিকল্পনার কথা শুনিয়েছিলেন মোদী। ২০২০ সালের স্বাধীনতা দিবসেও পরিকাঠামোর উন্নতির আশ্বাস দিয়ে ১০০ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা বলেছিলেন। এ বছর ফের ১০০ লক্ষ কোটির গতিশক্তি পরিকল্পনার কথা উঠে এল তাঁর ভাষণে। চিদম্বরমের কটাক্ষ, ‘‘আমাদের সামনে এখন ৩০০ লক্ষ কোটি টাকার পরিকল্পনা, যা অদূর ভবিষ্যতেই শুরু হতে চলেছে! ভারতবাসীর আনন্দ হওয়া উচিত যে প্রতিবছর পরিকাঠামোর পরিকল্পনা জিডিপি-র তুলনায় দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা টুইটারে লিখেছেন, ‘‘মোদীর মিথ্যে প্রতিশ্রুতিও এখন পুরনো হয়ে যাচ্ছে।’’
পাশাপাশি, স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় মেদিনীপুরের শহিদ মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন মোদী। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা নিয়ে বলতে গিয়ে ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ থেকে শুরু করে মাতঙ্গিনীর হাজরার নাম
করেন প্রধানমন্ত্রী। তখনই শহিদ মাতঙ্গিনীকে অসমের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করেন। যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেছে তৃণমূল।
স্বাধীনতা দিবসে মোদীর বক্তৃতার অন্যতম বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে জওহরলাল নেহরু প্রসঙ্গ। দেশভাগ ও কাশ্মীর সমস্যার জন্য মূলত নেহরুকেই দায়ী করে থাকে সঙ্ঘ পরিবার। কিন্তু মোদীর কথায়, ‘‘দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, সর্দার পটেলের হাত ধরেই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ভারত। দেশ তাঁদের কাছে চিরঋণী।’’ অনেকের মতে, নেহরুর প্রশংসা করে নিজের উদার ভাবমূর্তিই তুলে ধরতে চেয়েছেন মোদী। তবে ১৪ অগস্টকে যে ‘দেশভাগের বিভীষিকা স্মরণ দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লি ঘিরে রাখা কৃষকদের নিয়ে অবশ্য কোনও কথা বলেননি মোদী। তবে কৃষকদের উন্নতিতে সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে দাবি করেছেন, অতীতের কৃষিনীতিতে ছোট চাষিরা বঞ্চনার শিকার হতেন। তা ঘোচাতেই কৃষি আইন বদলানো হয়েছে।