ফাইল চিত্র।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার হওয়ায় উপত্যকায় নতুন ভোর এসেছে বলে আজ দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ অনলাইনে শ্রীনগরের সোনওয়ারের সূর্যমন্দিরে বৈষ্ণব ধর্মগুরু রামানুজাচার্যের একটি মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে শাহ দাবি করেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এক দিকে উন্নয়ন এসেছে, অন্য দিকে উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।’’ শাহ ওই মন্তব্য করলেও বিরোধীদের পাল্টা প্রশ্ন, উপত্যকা যদি সত্যিই শান্ত হত, তা হলে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা কেন প্রাণের ভয়ে সেখান থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন?
২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেই জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে রাজ্যটিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে মোদী সরকার। ওই ঘটনার তিন বছরের মাথায় আজ ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে শাহ দাবি করেন, ‘‘বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীর ভারতের প্রকৃত অঙ্গ হয়ে উঠুক, এমন দাবি দীর্ঘ সময় ধরেই ছিল। অবশেষে ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট কাশ্মীর নতুন ভোরের সাক্ষী থেকেছে।’’ শাহের দাবি, উপরাজ্যপাল মনোজ সিন্হা সুষ্ঠু ভাবে প্রশাসন চালানোয় এক দিকে যেমন উপত্যকায় উন্নয়নের ছবি স্পষ্ট, তেমনই জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রেও সাফল্য পেয়েছে প্রশাসন।
শাহের দাবির সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই বলেই অবশ্য মনে করছেন বিরোধীরা। বিশেষ করে গত ছয় মাসে যে ভাবে উপত্যকায় বেছে বেছে হিন্দু ও শিখ নাগরিকদের হত্যা করা হয়েছে, এখনও তার কোনও সমাধানসূত্র খুঁজে পায়নি নিরাপত্তা বাহিনী। দিনের আলোয়, প্রশাসনের নাকের ডগায় এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও ভীত কাশ্মীরি পণ্ডিতদের একাংশ এখন উপত্যকা থেকে জম্মুতে পালিয়ে আসার পক্ষপাতী। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘অথচ এই সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল ঘরছাড়া পণ্ডিতদের উপত্যকায় পুনর্বাসন দেওয়া হবে। তা তো হয়নি, উল্টে যাঁরা ছিলেন নিরাপত্তার অভাবে তাঁরাও পালাতে চাইছেন। অথচ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করছেন, কাশ্মীরে নতুন সকাল এসেছে। উনি ভুলে গিয়েছেন, গত মাসেই কী ভাবে উপত্যকায় হত্যাকাণ্ড থামাতে একের পর এক বৈঠক করতে হয়েছিল তাঁকে!’’