তাপ্পি দিয়ে ছোটখাটো সমস্যা ঢাকা যেতে পারে। কিন্তু তাতে জিএসটি-র আসল সমস্যার কোনও সমাধান হবে না বলে দাবি করলেন বিরোধীরা।
কংগ্রেস ও বাম নেতাদের অভিযোগ, জিএসটি নিয়ে মোদী সরকার এমন জট পাকিয়েছে যে, এখন তা খুলতে পারছে না। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা আজ বলেন, ‘‘আমরা এক দেশ, এক করের কথা বলেছিলাম। এখন এক দেশ, সাত রকম কর। কর আর হাজারো নিয়মের জঞ্জালে আমজনতা ও ব্যবসায়ীরা নাকাল।’’
আরও পড়ুন: মনমোহন নিয়ে হিমন্ত ও সুস্মিতার দ্বৈরথ টুইটারে
মোদী এ দিন গুজরাতে বলেছেন, ‘‘আমরা তো বলেইছিলাম, জিএসটি-তে কোথায় খামতি থাকছে, তিন মাস পরে তা দেখা হবে।’’ কিন্তু জিএসটি-র জটিলতার জেরে তিন মাস ধরে ব্যবসা থমকে থাকায় অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘আমরা সরকারকে সতর্ক করছিলাম। সরকার এখন ব্যর্থতা স্বীকার করছে। কিন্তু তার সমাধানে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে পারছে না।’’ আর সুরজেওয়ালার বক্তব্য, জিএসটি-তে বারবার যে ভাবে নিয়ম বদলাচ্ছে, তা দেখে নোট বাতিলের পরে বারবার নিয়ম বদলের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। তবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী শিবপ্রতাপ শুক্লের বক্তব্য, ‘‘সিঙ্গাপুরে নিখুঁত জিএসটি চালু করতে ৩ থেকে ৫ বছর লেগেছিল। এখানে ৩ মাসের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সব কিছু বিচার করবেন না।’’
জিএসটি-র চড়া হার নিয়ে সরব শিল্পমহলও। পঞ্জাব-হরিয়ানা-চণ্ডীগড় চেম্বার্সের সভাপতি গোপাল জিয়ারাজকা বলেন, ‘‘২৮% হারের স্তর তুলে দেওয়া হোক।’’ কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর পর্ষদের সদস্য (জিএসটি) মহেন্দ্র সিংহের ব্যাখ্যা, ‘‘ভবিষ্যতে একমাত্র ভোগ্যপণ্য এবং শরীর বা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর জিনিসেই ২৮% জিএসটি চাপবে।’’
অমদাবাদ-সুরাতের বস্ত্রশিল্পের ক্ষোভ সামলাতে সিন্থেটিক সুতো থেকে জরির কাজের মতো কিছু ক্ষেত্রে জিএসটি-র হার কমানো হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসের দাবি, এতে বড় মাপের বস্ত্র শিল্পের লাভ হবে। যারা নিজেরাই সুতো ও কাপড় তৈরি করে। কিন্তু মার খাবেন তাঁতিরা। কারণ সুতোয় জিএসটি কমিয়ে ৫% করলেও কাপড়ে জিএসটি ১২% রয়েছে।
গুজরাতিদের মন জিততে অরুণ জেটলি খাকরার উপর জিএসটি কমিয়েছেন। কিন্তু সার, কীটনাশক, ট্রাক্টর, হিমঘরের যন্ত্রাংশে বোঝা কমেনি। সুরজেওয়ালার কটাক্ষ, ‘‘এতেই সরকারের কৃষক-বিরোধী চরিত্র স্পষ্ট।’’ ছোট ও মাঝারি শিল্পকে সুরাহা দিতে বলা হয়েছে, ৭৫ লক্ষ টাকার বদলে এখন বছরে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসায় নির্দিষ্ট একটি হারে জিএসটি মেটালেই চলবে। কংগ্রেসের যুক্তি, ২০০৬ থেকেই ১.৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসায় উৎপাদন শুল্কের ক্ষেত্রে এই সুবিধা ছিল। মূল্যবৃদ্ধি ধরলে এখন তা ৩ কোটি হওয়া উচিত।