প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল ছবি।
বিরোধীরা কার্যত এক জোট হয়ে সংসদে প্রতিদিন গলা ফাটাচ্ছেন, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধের অভিযোগে। আজ সকালে তৃণমূল বি আর অম্বেডকরের মূর্তির সামনে এই নিয়ে ধর্নাও দিয়েছে। আমেরিকা এবং ইউরোপ বার বার নানা ভাবে ভারতে বাকস্বাধীনতা, সহিষ্ণুতা, বহুত্ববাদ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এই আবহে আজ ‘মহাভারত’, বেদ-এর জয়গান গাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তুলে ধরলেন ভারতের সুপ্রাচীন গণতন্ত্রের কথা। তা নিয়ে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা
দক্ষিণ কোরিয়া আয়োজিত গণতন্ত্র বিষয়ক সম্মেলনে মোদী তাঁর ভিডিয়ো বক্তৃতায় তুলে আনলেন মহাভারতের প্রসঙ্গ। বললেন, “আমাদের প্রাচীন মহাকাব্য মহাভারতে বর্ণিত হয়েছে, একজন নাগরিকের প্রথম দায়িত্ব ছিল তাঁর নিজের দলনেতাকে বেছে নেওয়ার।” বেদের প্রসঙ্গ তুলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে মোদী বলেন, “গোটা পৃথিবীতে তৈরি হওয়ার আগে ভারতে নেতা নির্বাচনের ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পবিত্র বেদে রয়েছে সমস্ত রকমের মতকে সঙ্গে রেখে পরামর্শদানকারী সংস্থাগুলির মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিচালিত হত। এ রকম বহু ঐতিহাসিক উদাহরণ রয়েছে।” প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে ‘অজ্ঞতা’ হিসাবে তুলে ধরতে চাইছেন বিরোধী দলের নেতারা। তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের বক্তব্য, “প্রাচীন ভারতে ছিল রাজতন্ত্র। ক্ষমতা হয় উত্তরাধিকারের মাধ্যমে আবর্তিত হত, নয়তো অস্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে যুদ্ধ করে তা ছিনিয়ে নেওয়া হত। ফলে মোদী যা বলছেন তার কোনও মানেই দাঁড়াচ্ছে না। এ কারণেই তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে।” বিরোধী নেতাদের মতে, উজ্জয়িনী থেকে পাটলিপুত্র— সর্বত্রই রণরক্তের ইতিহাস। মহাভারতের মূল আখ্যানটিই তৈরি হয়েছে কুরু-পাণ্ডবের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে।
প্রধানমন্ত্রী ভারতকে ‘গণতন্ত্রের মাতৃস্বরূপা’ হিসাবে আজ আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে তাঁর সরকারের জনপ্রিয় স্লোগানটির উল্লেখ করে বলেছেন, “গণতন্ত্র শুধু একটি কাঠামো নয়, এটি আত্মিক উদ্দীপনাও। প্রত্যেকটি মানুষই যে গুরুত্বপূর্ণ, সেই বিশ্বাসের উপরই তার ভিত্তি। সে কারণেই ভারতের আমাদের দিশা নির্দেশকারী দর্শন হল সব কা সাথ সব কা বিকাশ।”