মণিপুরের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিস্ফোরণ। ছবি সংগৃহীত।
আবারও অশান্ত হয়ে উঠল মণিপুর। এ বার মণিপুরের এক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে বিস্ফোরণে প্রাণ গেল এক পড়ুয়ার। আহত আরও এক। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। এই বিস্ফোরণের নেপথ্যে কারা আছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যে রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা বিস্ফোরক রেখে গিয়েছিল। সেই বিস্ফোরক ফেটেই এমন কাণ্ড ঘটেছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ইম্ফলের পশ্চিমে ধানমঞ্জুরি (ডিএম) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে অবস্থিত অল ইন্ডিয়া মণিপুর স্টুডেন্টস্ ইউনিয়নের (এএমএসইউ) কার্যালয়ের সামনেই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা এসে দু’জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে। অপর জনের চিকিৎসা চলছে। মৃত যুবকের নাম ওইনম কেনেগি (২৪)। পুলিশের একটি বিশেষ দল বিস্ফোরণস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কারও খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিযুক্তদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ন’মাস আগে ‘তফসিলি তকমা’ ঘিরে মতবিরোধের জেরেই মণিপুরে মেইতেই-কুকি সংঘাত ছড়িয়েছিল। যা থেকে রাজ্য জুড়ে হিংসার সূচনা। গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার এই অশান্তি থামাতে সমাধান খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।