Entertainment News

এক সময় আত্মহত্যার কথা ভাবতাম, বলছেন এআর রহমান

সাক্ষাৎকারে রহমান বলেছেন, ‘‘অন্তত ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত আমি আত্মহত্যার কথা ভাবতাম। অধিকাংশ মানুষই ভাবতেন, আমি খুব ভাল মিউজিক কম্পোজার নই। তার উপর ছোট বেলাতেই বাবা মারা যান। পার্থিব আরও অনেক কিছু ছিল, যার জন্য পুরোপুরি হতাশায় ডুবে থাকতাম।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:০২
Share:

এ আর রহমান। —ফাইল ছবি

আজ তিনি বিশ্ববন্দিত। ঝুলিতে রয়েছে অস্কার। এ ছাড়াও দেশ-বিদেশের বহু পুরস্কারে আজ তাঁর প্রাপ্তির ঝুলি প্রায় পূর্ণ। তবু বিশ্বখ্যাত সেই সুরকার-সঙ্গীত পরিচালক আল্লারাখা রহমানই এক সময় হতাশায় আত্মহত্যার কথা ভাবতেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি এমনই জানিয়েছেন পদ্মভূষণ এআর রহমান।

Advertisement

শনিবারই মুম্বইয়ে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর জীবনী ‘দি অথরাইজড বায়োগ্রাফি অব এআর রহমান’। লিখেছেন কৃষ্ণা তিলক। সেই উপলক্ষে পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রহমান বলেছেন, ‘‘অন্তত ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত আমি আত্মহত্যার কথা ভাবতাম। অধিকাংশ মানুষই ভাবতেন, আমি খুব ভাল মিউজিক কম্পোজার নই। তার উপর ছোট বেলাতেই বাবা মারা যান। পার্থিব আরও অনেক কিছু ছিল, যার জন্য পুরোপুরি হতাশায় ডুবে থাকতাম।’’

‘‘সবাই আশ্চর্য হয়ে যেত, আমি কী ভাবে বেঁচে আছি। আমি তখন বছর পঁচিশের। মনে হত, যেন সব কিছুই খাচ্ছি, অথচ শরীরে কোনও চেতনা নেই।’’ দু’-দু’টি অস্কারের মালিক রহমান আরও বলছেন, ‘‘মনে হত, ১২ থেকে ২২ বছরের মধ্যেই যেন আমি সব কিছু হারিয়ে ফেলেছিলাম। দৈনন্দিন কাজকর্মের কিছুই ভাল লাগত না। আমি ওগুলো করতেই চাইতাম না।’’ তবে পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টাতে থাকে বাড়ির পিছনেই নিজের সঙ্গীত স্টুডিয়ো ‘পঞ্চথন রেকর্ড ইন’ তৈরির পর থেকে।

Advertisement

আরও পডু়ন: ‘ওঁর বিয়ে তো আমি কী করব?’ প্রিয়ঙ্কা প্রসঙ্গে মন্তব্য শাহরুখের

বাবা ছিলেন আর কে শেখর ছিলেন মিউজিক কম্পোজার। বহু সিনেমায় কাজ করেছেন। কিন্তু রহমানের মাত্র ন’বছর বয়সেই মারা যান তিনি। সেই সময় তাঁর সঙ্গীতের সরঞ্জাম ভাড়া দিয়ে সংসার চলত তাঁদের। তবে জীবনের এই কঠিন ঘাত প্রতিঘাত থেকেই নির্ভয় হওয়ার শিক্ষা নিয়েছেন রহমান। তার সঙ্গে ছিল তাঁর পিতৃদত্ত নাম। এটা অনেকেই জানেন না, রহমানের ছোট বেলার নাম ছিল ‘দিলীপ কুমার’। এটা ছিল তাঁর অন্যতম অপছন্দের জিনিস। কারণ তিনি সব সময় চাইতেন, নিজের পরিচয়ে বাঁচতে। কোনও নায়কের নামের হিসাবে তিনি বাঁচতে চাইতেন না। বলছেন ‘ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন আর্ট’ (বাফটা) পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী। সেই কারণেই হয়তো পরে তিনি নাম পরিবর্তন করে হন আল্লারাখা রহমান। ভারত তথা বিশ্ববাসী যাকে এআর রহমান নামেই বেশি চেনে।

আরও পডু়ন: দীপিকা পাড়ুকোনের বিয়ের মঙ্গলসূত্রই ২০ লাখ টাকার!

আর জীবনের এই কঠিন সময়, নামের প্রতি বিতৃষ্ণা তাঁকে বরং প্রেরণা দিয়েছে। এই কঠিন সময় কাটাতে কাটাতেই মণিরত্নমের ছবি ‘রোজা’ থেকে উত্থান শুরু। কার্যত সঙ্গীতের সব গ্রামার ভেঙে এমন এক সুর-তাল-লয় সৃষ্টি করেছিলেন, যে সেই সময় তাঁকে বলা হত বলিউডে প্রবেশ করেছে এক ‘ওয়ান্ডার কিড’। সেই স্বপ্নের উড়ান আর থামেনি।

শব্দ-সুর-সঙ্গীতের এমন মেলবন্ধন সৃষ্টির রহস্য সম্পর্কেও নিজের ভাবনার কথা প্রকাশ করেছেন হলিউডের গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার জয়ী রহমান। বলেছেন, ‘‘আগে নিজেকে বুঝতে হবে, আমি কি। মনের কথা শুনতে হবে। আর সেটা একবার শুনতে পেলে আপনি হারিয়ে যাবেন এবং নিজেকে ভুলে ওই অন্তরের জগতে ঢুকে পড়বেন।’’

আর এই কারণেই রহমান সব সময় ভোর এবং রাতে কাজ করতে পছন্দ করেন। সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন, এক বার যদি আমি ওই জগতে ঢুকে পড়ি, তার পর আশপাশে সামান্য শব্দ হলেও মনঃসংযোগ নষ্ট হয়ে যায়। পরে চেষ্টা করেও আর সেই জায়গায় পৌঁছতে পারি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement