নিজের এই অবস্থার জন্য ছেলে গৌতম সিংহানিয়াকেই দায়ী করেছেন বিজয়পত। ছবি: সংগৃহীত।
এক সময়ে দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে রেমন্ডের মতো সংস্থার মালিকানা। কিন্তু, এখন মুম্বইয়ের একটি ভাড়াবাড়িতে দিন কাটছে তাঁর। নিজের এই অবস্থার জন্য এক জনকেই দায়ী করেন বিজয়পত সিংহানিয়া: তাঁর ছেলে গৌতম সিংহানিয়া। নিজের অধিকারের দাবিতে রেমন্ডের সিইও গৌতমের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজয়পত।
সম্প্রতি মুম্বই হাইকোর্টে একটি আবেদন করেছেন বিজয়পত। তাতে তাঁর দাবি, মালাবার হিলের ৩৬ তলা বহুতলে একটি ডুপ্লে-র মালিকানা তাঁকে দেওয়া হোক। বুধবার আদালতে বিজয়পতের আইনজীবী দিনওয়ার মেডন জানিয়েছেন, দক্ষিণ মুম্বইয়ের গ্র্যান্ড পারাডি সোসাইটিতে ভাড়াবাড়িতে থাকতে হচ্ছে তাঁর মক্কেলকে। দিনওয়ারের অভিযোগ, ৭৮ বছরের বিজয়পত ছেলেকে তাঁর সম্পত্তি দিয়ে দিলেও বাবাকে বঞ্চিত করতে চাইছেন গৌতম। রেমন্ড-এর এক হাজার কোটি টাকা অর্থমূল্যের নিজের সমস্ত শেয়ার গৌতমকে দিয়ে দিয়েছেন বিজয়পত। কিন্তু, তার বদলে বাবার ড্রাইভার-সহ গাড়ির সুবিধাও কেড়ে নিয়েছেন গৌতম।
আরও পড়ুন
নীতীশকে ফের ধাক্কা দিয়ে আহমেদ পটেলকে অভিনন্দন শরদের
আদালতে বিজয়পতের আইনজীবী জানিয়েছেন, ১৯৬০-এ চোদ্দোতলার জে কে হাউসের উদ্বোধন হয়। পরে এতে আরও চারটি ডুপ্লে তৈরি করা হয়। যা রেমন্ডের সহযোগী সংস্থা পশমিনা হোল্ডিংয়কে দিয়ে দেওয়া হয়। ২০০৭-এ এই বহুতলের আরও কয়েকটি তলা বাড়ানো হয়। এর একটি চুক্তি অনুযায়ী, বিজয়পত ও তাঁর ছেলে তথা রেমন্ডের সিইও গৌতম, বিজয়পতের ভাই প্রয়াত অজয়পতের স্ত্রী বীণাদেবী এবং তাঁর দুই ছেলে অনন্ত ও আকাশপত— সকলেই ওই নতুন বহুতলে ৫,১৮৫ বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট একটি করে ডুপ্লে পাবেন বলে স্থির হয়। কিন্তু, বাস্তবে তা হয়নি। বীণাদেবী ও অনন্ত এ নিয়ে একসঙ্গে আদালতে আবেদন করেছেন। আকাশপত আলাদা ভাবে আরও একটি আবেদন আদালতে জমা দিয়েছেন।
রেমন্ডের হয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন আইনজীবী জনক দ্বারকাদাস ও বিরাগ তুলজাপুরকর এবং একটি ল’ ফার্ম। তাঁরাই জানিয়েছেন, ওই আবেদনে শরিক করা হয়নি গৌতম-সহ দুই সংস্থা পশমিনা হোল্ডিং এবং রেমন্ড লিমিটেডকে।
আরও পড়ুন
রামকিঙ্করের গড়া মহাত্মা ‘বিকৃত’, সরাতে চেয়ে বিতর্কে অসম সরকার
রেমন্ড-এর এক হাজার কোটি টাকা অর্থমূল্যের নিজের সমস্ত শেয়ার ছেলে গৌতমকে দিয়ে দিয়েছেন বিজয়পত। ছবি: সংগৃহীত।
জে কে হিলের বহুতলে ২৭ ও ২৮ তলার দখল যাতে রেমন্ড নিতে না পারে তার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজয়পত। সেই সঙ্গে আলাদা বাড়িতে বসবাসের জন্য প্রতি মাসে ৭ লক্ষ টাকা দাবিও করেছেন বিজয়পত। তবে তাতে আপত্তি জানিয়েছেন রেমন্ডের আইনজীবী দ্বারকাদাস। এর জন্য কিছু সময় চেয়ে নিয়েছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, গত জুনে সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডাররা এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। মেডনের দাবি, গৌতম ওই বহুতলের চারটি ডুপ্লে-ই দখল করে রয়েছেন। এবং সংস্থার সিইও হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন।
বিচারপতি গিরিশ কুলকার্নি গোটা বিষয়টি আদালতের বাইরে আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তাতে সব পক্ষই রাজি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২২ অগস্ট।