সম্পত্তিতে মহিলাদের সমানাধিকার আরও সুরক্ষিত করে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।
আইন সংশোধন করে পৈত্রিক সম্পত্তিতে হিন্দু মহিলাদের সমানাধিকার আগেই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সংশোধনীতে ‘রেট্রোস্পেকটিভ এফেক্ট’ নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। অর্থাৎ ২০০৫ সালে আইন প্রণয়নের আগেও কি এই অধিকার পাবেন মহিলারা। সেই সংশয় দূর করে মহিলাদের সম্পত্তির অধিকারে সেই ‘রেট্রস্পেকটিভ এফেক্ট’ও দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ ২০০৫ সালের আগেও কারও বাবার মৄত্যু হলে সেই সম্পত্তিতে ছেলের মতোই মেয়েও সমানাধিকার পাবেন। এই রায় দিয়ে বিচারপতিই অরুণ মিশ্রর নেতৄত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘মেয়ে মানে সব সময়ই মেয়ে।’’
১৯৫৬ সালের হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করে নতুন আইন কার্যকর হয়েছিল ২০০৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। ওই সংশোধনীর ৬ নম্বর ধারায় মহিলাদের পূর্বপুরুষের সম্পত্তিতে মেয়েদের সমানাধিকার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সমানাধিকার কি নতুন আইন প্রণয়ণের আগেও কার্যকর হবে, অথবা আইন কার্যকর হওয়ার আগে বাবা মারা গেলেও কি মেয়েরা সমান সম্পত্তি পাওয়ার যোগ্য? এই প্রশ্ন তুলে দেশের বিভিন্ন আদালতে একাধিক মামলা হয়। নিম্ন, উচ্চ আদালত হয়ে শীর্ষ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল প্রচুর মামলা। সেই সব মামলা এক জায়গায় করে শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চে। মঙ্গলবার সেই মামলাগুলিতেই এই রায় দিয়েছে বেঞ্চ।
এ দিনের রায় অনুযায়ী, ২০০৫ সালের আগে কারও বাবা মারা গেলেও সেই সম্পত্তিতে ছেলে ও মেয়ের সমানাধিকার থাকবে। বিচারপতি মিশ্র এ দিন বলেন, ''একবার মেয়ে মানে সারাজীবন সে মেয়ে। অবিভক্ত যৌথ পরিবারের সম্পত্তিতে মেয়েরও সারাজীবন সমান অধিকার (আইনি পরিভাষায় যাকে বলা হয় কোপার্সানার)। বাবা বেঁচে আছেন না মারা গিয়েছেন, সেটা অপ্রাসঙ্গিক।''
আরও পড়ুন: পাইলটের প্রত্যাবর্তন জয়পুরে, বিধায়কদের ক্ষোভ সামলাতে জয়সালমিরে গহলৌত
আরও পড়ুন: বাড়াতেই হবে টেস্ট, কনট্যাক্ট ট্রেসিং, মমতাদের বললেন মোদী
কিন্তু এই ‘রেট্রস্পেক্টিভ এফেক্ট’ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেরই একাধিক মামলায় বিষয়টি এত দিন স্পষ্ট হয়নি। ২০১৬ সালে প্রকাশ বনাম ফুলবতী মামলায় শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছিল, এই আইনে রেট্রস্পেক্টিভ এফেক্ট নেই। অন্য দিকে ২০১৮ সালে আবার সুপ্রিম কোর্টেরই অন্য বেঞ্চ দামান্না বনাম অমর এর মামলায় রেট্রস্পেক্টিভ এফেক্ট মেনে নিয়েছিল। ফলে এ নিয়ে ধোঁয়াশা স্পষ্ট হয়নি এত দিন। মঙ্গলবারের রায়ে সেই ‘রেট্রস্পেক্টিভ এফেক্ট’ বিতর্কেরও অবসান হল বলেই মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।