লন্ডনের আলোচনা সভায় ভারত বিরোধী মন্তব্যের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন রাহুল। ছবি: পিটিআই।
ব্রিটেন সফরে গিয়ে তিনি ‘দেশকে অপমান’ করেছেন বলে বিজেপি শিবিরের অভিযোগ। তাঁর ‘নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা’র দাবিতে ৪ দিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় নজিরবিহীন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সরকারপক্ষের সাংসদেরা। এই পরিস্থিতিতে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে প্রথম বারের জন্য সংসদে এসে রাহুল গান্ধী জানালেন, তিনি দেশবিরোধী কোনও মন্তব্য করেননি।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে ঢোকার আগে ওয়েনাড়ের কংগেস সাংসদ রাহুল বলেন, ‘‘আমি (লন্ডনের আলোচনা সভায়) ভারতবিরোধী কিছুই বলিনি। যদি তাঁরা সুযোগ দেন, তবে আমি সংসদের ভিতরেও সে কথা বলব।’’
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের গোড়ায় লন্ডনে গিয়ে ব্রিটিশ সাংসদ বীরেন্দ্র শর্মার আমন্ত্রণে সে দেশের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের সাংসদের একাংশের সঙ্গে আলোচনা সভায় যোগ দিয়েছিলেন রাহুল। কথা বলতে গিয়ে তিনি দেখেন মাইক খারাপ। রাহুল তখন বলেছিলেন, ‘‘ভারতীয় সংসদে কিন্তু মাইক খারাপ হয়নি। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিতর্কের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে।’’ বিদেশের মাটিতে তাঁর এই বক্তব্যকে ‘দেশের অপমান’ বলে চিহ্নিত করেছে বিজেপি।
কংগ্রেসের অভিযোগ, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ গৌতম আদানির বিরুদ্ধে তোলা শেয়ার জালিয়াতি থেকে নজর ঘোরাতেই জলঘোলা করছে বিজেপি। অতীতে প্রধানমন্ত্রী মোদীও অনেক বারই বিদেশসফরে গিয়ে ঘরোয়া রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলেছেন বলেও তাদের দাবি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এক বছর পরে, ২০১৫ সালের মে মাসে চিন এবং দক্ষিণ কোরিয়া সফরে গিয়েছিলেন মোদী। চিনে তিনি বলেন, ‘‘এক বছর আগেও ভারতীয় হিসাবে পরিচয় দিতে লজ্জা হত।’’ সে সময় কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্স-সহ একাধিক বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি তুললেও তাতে কর্ণপাত করেননি বিজেপি নেতৃত্ব।
অভিযোগ, সে বছরেরই অগস্ট মাসে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আয়োজিত বাণিজ্য সম্মেলেন প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর পূর্বসূরি মনমোহন সিংহকে খোঁচা দিয়ে মোদী বলেছিলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমি একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাহীন এবং অলস সরকারের উত্তরাধিকারী হয়েছি।’’
লন্ডনে রাহুলের মন্তব্যের পরেই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা বাহরাইন সফরে গিয়ে কোনও নাম না করে বলেন, ‘‘ভারতের সংসদে সব সাংসদেরই নিজেদের মতামত ব্যক্ত করার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।’’ ঘটনাচক্রে, রাহুলের সংসদে ‘প্রত্যাবর্তনের’ দিনেই কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী স্পিকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, গত ৩ দিন ধরে তাঁর আসনের মাইকটি বন্ধ করা রয়েছে।