উপত্যকায় বন্দি ওমর আবদুল্লা। —ফাইল চিত্র।
কাশ্মীরে তিনি একটু বেশিই জনপ্রিয়। জঙ্গিরা ভোট বয়কটের ডাক দেওয়া সত্ত্বেও মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেয় তাঁর দলকে। এই জন্যই তাঁকে জন নিরাপত্তা আইন (পিএসএ)-এ বন্দি থাকতে হবে। কারণ ছাড়া পেলে তিনি কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে মানুষকে জড়ো করতে পারেন, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রচার করতে পারেন। এমনকি কাশ্মীরের মানুষকে জঙ্গিবাদেও উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, দু’বারের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাকে ৬ মাস আটক রাখার পরে তাঁর বিরুদ্ধে বিতর্কিত পিএসএ প্রয়োগ করেছে কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন। এর ফলে বিনা বিচারে আরও ৩ মাস পর্যন্ত তাঁকে আটক রাখা যাবে তাঁকে। কেন পিএসএ, রবিবার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রশাসন তা জানিয়েছে। তাতেই ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমরের বিরুদ্ধে এই সব ‘অভিযোগ’ আনা হয়েছে।
ওমরের সঙ্গে পিএসএ প্রয়োগ করা হয়েছে আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির বিরুদ্ধেও। পিডিপি-র এই নেত্রী নানা সময়ে ‘রাষ্ট্র-বিরোধী বিবৃতি’ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। জামাত-ই ইসলামি-র মতো ইউএপিএ-তে নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে তাঁর দহরম মহরমের কথাও বলা হয়েছে।
আগস্টের ৫ তারিখে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গেই গোটা কাশ্মীরে কার্ফু জারি ও ইন্টারনেট বন্ধের পাশাপাশি তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আটক করা হয়। ওমরের বাবা ফারুখ আবদুল্লাকে আটক করা হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে তা অস্বীকার করেন। তার পর তাঁর বিরুদ্ধেই প্রথম পিএসএ প্রয়োগ করে বিনা বিচারে আটকের বন্দোবস্ত করে কেন্দ্র। এ মাসের ৫ তারিখে ওমর ও মেহবুবার আটক ছ’মাস পেরোনোর পরে তাঁদের বিরুদ্ধেও পিএসএ প্রয়োগ করা হয়।
আরও পড়ুন: সিএএ থেকে মুদ্রাস্ফীতি, নাজ়মা আপির ইনস্টা-তির
রবিবার ছিল সংসদ হামলায় অভিযুক্ত আফজল গুরুর ফাঁসির সপ্তম বার্ষিকী। এ দিন কাশ্মীরে হরতালের ডাক দিয়েছিল জেকেএলএফ। বিক্ষোভ রুখতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এ দিন ভোর থেকে গোটা উপত্যকায় মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। পরে সন্ধ্যায় তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার রাতে জেকেএলএফ-এর বিরুদ্ধে এফআইআর করে পুলিশ। বিচ্ছিন্নতাবাদী এই সংগঠনের বিবৃতি প্রকাশ করার জন্য শ্রীনগরের দুই সাংবাদিককেও তুলে আনে। পরে অন্য সাংবাদিকরা পুলিশের আইজি-র কাছে গিয়ে দরবার করলে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। সাংবাদিকরা অভিযোগ করেছেন, জেরার নামে তাঁদের হেনস্থা করেছে পুলিশ। পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোনও খবর প্রকাশ করা যাবে না।