উরি, বারামুলা, নাগরোটার কায়দায় এ বার কুপওয়ারার সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালাল জঙ্গিরা। তবে এ যাত্রা আত্মঘাতী জঙ্গিরা ঘাঁটির ভিতরে ঢুকতে পারেনি। তার আগেই সেনার পাল্টা হামলায় খতম হয়েছে দুই জঙ্গি। তৃতীয় জঙ্গির খোঁজে অভিযান চলছে। নিহত হয়েছেন এক তরুণ অফিসার-সহ তিন সেনাও।
সংঘর্ষের পরে নিহত জঙ্গিদের দেহ ছিনিয়ে নিতে পাথর ছুড়তে ছুড়তে সেনার শিবিরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে এক দল বিক্ষোভকারী। পরিস্থিতি সামলাতে গুলি চালান জওয়ানরা। তাতে নিহত হয়েছেন ৫৫ বছরের এক স্থানীয় বাসিন্দা।
সেনার তরফে জানানো হয়েছে, আজ ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ কুপওয়ারার পঞ্জগ্রামে সেনা ঘাঁটির বাইরের বেড়া কেটে ভিতরে ঢোকে জঙ্গিরা। গ্রেনেড ও এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ে সেনাদের থাকার ঘরগুলিতে ঢোকার চেষ্টা করে তারা। প্রথমে তাদের আটকান পাহারায় থাকা জওয়ান ঋষি কুমার। সংঘর্ষে আহত হন তিনিও। পরিস্থিতি বুঝে জঙ্গিদের উপরে সরাসরি হামলা করেন ২৫ বছরের ক্যাপ্টেন আয়ুষ যাদব। লড়াইয়ে নিজে নিহত হলেও জঙ্গিদের ঘরে ঢোকার চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন তিনি। পঞ্জগ্রামের ঘাঁটি আপাতত রয়েছে ১১৫ নম্বর আর্টিলারি রেজিমেন্টের হাতে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পাশের একটি শিবির থেকে ২১ নম্বর জ্যাকরিফ রেজিমেন্টের একটি বড় বাহিনী এসে পড়ে। ঘাঁটির ফটকের কাছে জঙ্গিদের কোণঠাসা করে ফেলেন সেনারা। ৩৫ মিনিট লড়াইয়ের পরে খতম হয় দুই জঙ্গি। সংঘর্ষে নিহত হন জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার ভূপ সিংহ গুজ্জর দুসা ও নায়েক বেঙ্কট রমনও। আহত হন পাঁচ জওয়ান।
সেনা জানিয়েছে, হামলাকারীদের দলে ছিল তিন জন। তৃতীয় জঙ্গির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে সেনা। ১১৫ নম্বর আর্টিলারি রেজিমেন্টের কর্নেল সৌরভ জোশীর দাবি, নিহত জঙ্গিরা পাকিস্তানি। তাদের কাছ থেকে তিনটি একে৪৭, জিপিএস ও বেশ কিছু দিন টিকে থাকার মতো রসদ পাওয়া গিয়েছে। সেনার মতে, নিহতরা জইশ-ই-মহম্মদের সদস্য।
আরও পড়ুন...
উন্নয়নে কি শান্ত হবে ভূস্বর্গ, সংশয়ে কেন্দ্র
সংঘর্ষের পরে নিহত জঙ্গিদের দেহ রাখা হয়েছিল জ্যাকরিফ রেজিমেন্টের শিবিরে। দেহগুলি তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পাথর ছুড়তে ছুড়তে তাঁরা সেনা শিবিরে ঢুকে পড়ারও চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি সামলাতে গুলি চালায় সেনা। তাতে ৫৫ বছরের স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ ইউসুফ বাট নিহত হন। সেনা গোয়েন্দাদের মতে, ২৩ এপ্রিল নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে কাশ্মীরে ঢোকে জঙ্গিদের এই দলটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সাহায্যেই তারা ঘাঁটির কাছে পৌঁছয়। এ ভাবেই উরি, নাগরোটা,
বারামুলায় হামলা হয়েছিল। কুপওয়ারার ঘাঁটির ভিতরে সেনাদের থাকার ঘরে আশ্রয় নিয়ে দীর্ঘ লড়াই চালাতে চেয়েছিল হামলাকারীরা।
এক সেনা কর্তার কথায়, ‘‘ঋষি কুমার, আয়ুষ যাদবদের জন্যই আরও রক্তপাতের হাত থেকে বেঁচে গেল সেনাবাহিনী।’’