প্রতীকী ছবি।
১৫ বছরের দলিত মেয়েটির ‘অপরাধ’ ছিল, গ্রামের এক ‘উচ্চবর্ণের’ বাড়ির গাছ থেকে ফুল পেড়েছিল সে। আর শুধু সেই কারণেই ওড়িশার ঢেঙ্কানলের কাঁতিও কাতেনি গ্রামের ৪০টি দলিত পরিবারকে গত দু’সপ্তাহ ধরে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এই না-বলে ফুল তোলার ঘটনাটি দু’মাস আগেকার। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানায় একটি পরিবার। বিষয়টি নিয়ে দলিত এবং ‘উচ্চবর্ণের’ মানুষের মধ্যে তর্কাতর্কি-ঝগড়া হয়। তার পরেই রীতিমতো পঞ্চায়েতের বৈঠক ডেকে ওই ৪০টি দলিত পরিবারকে একঘরে করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন এক গ্রামবাসী।
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খুলতে গিয়ে মেয়েটির বাবা নিরঞ্জন নাইক বলেন, ‘‘বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরেও একাধিক বার বৈঠক ডেকে আমাদের একঘরে করে দেওয়া হয়। আমাদের সঙ্গে গ্রামের কেউ কথা বলেন না। বলা হয়েছে, গ্রামের সামাজিক অনুষ্ঠানেও আমরা যোগ দিতে পারি না।’’
আরও পড়ুন: রাজ্যসভার উপনির্বাচনে যোগীরাজ্যে মুকুল?
আরও পড়ুন: গার্গলের জল থেকে সায় নমুনা সংগ্রহে
গ্রামে প্রায় ৮০ পরিবারের বাস। তার মধ্যে ৪০টি দলিত পরিবার। এই ঘটনায় সেই পরিবারগুলির পক্ষ থেকে ১৭ অগস্ট জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় থানায় স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। গ্রামের আর এক বাসিন্দা জ্যোতি নাইকের অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় দোকানদারেরা আমাদের জিনিস বেচা বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য আমাদের পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে যেতে হচ্ছে। গ্রামবাসীরা আমাদের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন।’’ স্মারকলিপিতে দলিত পরিবারগুলি আরও অভিযোগ জানিয়েছে, গ্রামের রাস্তা দিয়ে তাদের বরযাত্রী বা মৃতদেহ নিয়ে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এমনকি ‘উচ্চবর্ণের’ মানুষদের তরফে ফতোয়া দেওয়া হয়েছে, দলিত শিশুরা গ্রামের সরকারি স্কুলে পড়তে পারবে না। যদিও পঞ্চায়েত সদস্য হরমোহন মালিক বলেছেন, ‘‘এটা ঠিক যে গ্রামবাসীদের বলা হয়েছে ওই পরিবারগুলির সঙ্গে কথা না বলতে। কিন্তু বাকি সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’