আলোর বন্যা। আজ, শুক্রবার নীতীশ কুমারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সেই উপলক্ষেই সেজে উঠেছে গাঁধী ময়দান। বৃহস্পতিবার পটনায়। ছবি: পিটিআই।
এর আগেও গাঁধী ময়দানে শপথগ্রহণ হয়েছে। তবে এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগে দেখেননি রবি কুমার। বিহার রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের এই কনস্টেবল আগামী মাসে অবসর নেবেন। হাজিপুরের বাসিন্দা রবি কুমার ২০০৫ সাল নীতীশ কুমারের প্রথম বার শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানেও হাজির ছিলেন। সে বারে অবশ্য বিজেপির সঙ্গে ছিলেন নীতীশ। এ বারে নতুন সঙ্গী লালু প্রসাদ এবং কংগ্রেস। রবি কুমার মুখে কিছু না বললেও এতে খুশিই। এক কথায় তাঁর অভিমত, ‘‘নীতীশ বাবু আছেন তো। চিন্তা কী!’’
সাত দিন ধরে কাজ চলছে গাঁধী ময়দানে। মানুষ তো দূরের কথা, মাছি প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা! এই সেই গাঁধী ময়দান যেখানে চম্পারণ সত্যাগ্রহের শুরু করেছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এই ময়দানের। এখানেই ‘সম্পূর্ণ ক্রান্তি আন্দোলন’ শুরু করেছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ। এই ময়দান থেকেই শুরু হয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা
গাঁধীকে সরানোর আন্দোলন। সেই আন্দোলন থেকেই উঠে এসেছেন আজকের লালু প্রসাদ, নীতীশ কুমার, রামবিলাস পাসোয়ান, সুশীল মোদী, রবিশঙ্কর প্রসাদরা। ২০০৫ সালের ২৪ নভেম্বর এই ময়দানেই লালু প্রসাদকে হারিয়ে শপথ নিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। বিহারের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ছিল সে দিন!
দশ বছর পরে ফের সেখানেই শপথ নিচ্ছেন নীতীশ। এই দশ বছরে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। দেশের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হতে চলেছে নীতীশের শপথগ্রহণকে ঘিরে। এ বার, সেই রাজনৈতিক সমীকরণেরও সাক্ষী হতে চলেছে গাঁধী ময়দান। দেশের প্রায় ৪০ জন শীর্ষস্থানীয় নেতা হাজির থাকবেন গাঁধী ময়দানে। তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থাও চোখে পড়ার মতো। সাম্প্রতিক অতীতে এ ভাবে কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণে দেশের তাবড় নেতারা হাজির হয়েছেন বলে মনে করতে পারছেন না কেউই।
এখানেই নীতীশের শপথ। তার আগে মঞ্চসজ্জার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। বৃহস্পতিবার পটনায়। ছবি: শ্যামলী দে।
আজ রাত বারোটা থেকেই পটনা শহরে বাইরের গাড়ি ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। গাঁধী ময়দানের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেছেন খোদ ডিজি পি কে ঠাকুর। পটনার এসএসপি বিকাশ বৈভব নিজে রয়েছেন মঞ্চের নিরাপত্তার দায়িত্বে। সিসিটিভি লাগানো হয়েছে ময়দানের চারপাশে। পুলিশ কুকুর নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ঘুরে বেড়াচ্ছে গোটা মাঠ জুড়েই। মূল মঞ্চের নীল-সাদা রঙের চাঁদোয়া দেখলে হঠাত্ মনে হবে পশ্চিমবঙ্গের কোনও অনুষ্ঠান! তবে বসার জায়গায় রয়েছে লাল রঙের চেয়ার!
রাতেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পটনার জয়প্রকাশ নারায়ণ বিমান বন্দরে এসে পৌঁছেছেন। সেখান থেকে তিনি হোটেলে চলে যান। আগামিকাল সকাল থেকেই বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা আসবেন। নীতীশের শপথ অনুষ্ঠানে থাকবেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝিও। বিজেপির রাজ্য নেতাদেরও থাকার কথা। সব মিলিয়ে ‘মেগা ইভেন্ট’-এর জন্য তৈরি গাঁধী ময়দান।