জঙ্গি দমনে সেনা-আধা সেনাকে সাহায্য করতে কাশ্মীর পৌঁছল এনএসজি বা ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের কম্যান্ডোরা। নির্দিষ্ট নিশানায় নিখুঁত আঘাত হেনে বাড়তি ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোয় দক্ষ এই বাহিনীকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ায় অনেকেই বলছেন, অভিযানে এ বার সাবধানী হতে চাইছে সরকার। কম্যান্ডোরা আপাতত রয়েছেন বাদগাম জেলার হামহামা-র বিএসএফ সদর দফতরে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলছে, দিন সাতেক পরেই শুরু হচ্ছে অমরনাথ যাত্রা। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও জঙ্গি গোষ্ঠীর বার্তালাপে আড়ি পেতে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এ বছর বড়সড় হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে জঙ্গিরা। তীর্থযাত্রীদের অপহরণের চেষ্টাও হতে পারে। তাই পণবন্দি হলে তীর্থযাত্রীদের দ্রুত উদ্ধারের জন্য ‘হিট’ (হাউজ ইন্টারভেনশন টিম) কম্যান্ডোদের আগে ভাগেই উপত্যকায় মোতায়েন করেছে কেন্দ্র। এরা পণবন্দি উদ্ধারে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, তেমন পরিস্থিতি হলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কম্যান্ডোদের উড়িয়ে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হয়।
সরকারের এই সাজো সাজো রবের পরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া সরকারের বিশেষ দূত দিনেশ্বর শর্মার আর কোনও গুরুত্ব রইল না বলে অনেকে বলছিলেন। তবে সরকারের এক কর্তা জানিয়েছেন, অভিযানের সঙ্গে সঙ্গে আলোচনার দরজাও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই শর্মা তাঁর দায়িত্ব নিয়েই থাকছেন।
এ দিকে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে আগামিকাল সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যপাল এম এন ভোরা। বিজেপি-পিডিপি জোট সরকার ভাঙার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ছাড়াও অমরনাথ যাত্রা কী ভাবে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা বৈঠকে। অমরনাথ যাত্রাপথের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে আজ বৈঠকে বসেন রাজ্য পুলিশের ডিজি, চিনার কোর কম্যাণ্ডার, ভিক্টর ফোর্স কম্যান্ডার এবং সিআরপি-র আইজি।
এ দিকে জঙ্গি দমন অভিযানে গতি আনতে গত কালই রাজ্যপাল ভোরার উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে প্রাক্তন আইপিএস বিজয় কুমারকে। ১৯৭৫ সালের ব্যাচের ওই অফিসারের ঝুলিতে একাধিক সন্ত্রাস দমন অভিযানের অভিজ্ঞতা থাকায় তাঁকেই কাশ্মীরে এনেছে কেন্দ্র। দান্তেওয়াড়ায় মাওবাদী দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন বিজয়। এ ছাড়া ২০০৪-এ চন্দন দস্যু বীরাপ্পানকে নিকেশ করেছিল যে বাহিনী, তার নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৯৮ থেকে তিন বছর তিনি বিএসএফের আইজি হিসাবে কাশ্মীরে মোতায়েন ছিলেন। সুতরাং কাশ্মীরের জঙ্গি সমস্যা সম্পর্কে তিনি ভাল ভাবেই অবহিত। সেই বিজয় কুমারকে রাজ্যপালের উপদেষ্টা পদে নিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।