অবরোধে জেরবার মণিপুর।
বড়দিন উপলক্ষে শান্তি মঞ্চের আবেদনে সাড়া দিয়ে নাগা ছাত্র সংগঠন এনএসএফ মণিপুরে তাদের অর্থনৈতিক অবরোধ সাময়িক ভাবে প্রত্যাহার করে নিল। মণিপুরে বিদ্বেষের পরিবেশ ঘোচাতে আবেদন জানালেন ইরম শর্মিলা চানুও। ইউনাইটেড নাগা কাউন্সিল অবশ্য অবরোধ তুলতে রাজি হয়নি।
নাগা হো হো এনএসএফকে অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছিল। মণিপুরের মুখ্যসচিবও অবরোধ তুলতে অনুরোধ করে নাগা সংগঠনগুলিকে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই আবেদনে সাড়া দেয় এনএসএফ। তবে তারা জানায়, মণিপুর সরকারকেও সে রাজ্যে নাগাদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এই ঘোষণার পরে নাগাল্যান্ডের দিকে আটকে থাকা মণিপুরমুখী ট্রাক ধীরে চলতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে শান্তি মঞ্চের ডাকে সাড়া দিয়ে ইম্ফল-উখরুল রোড চলতে থাকা কুকিদের পাল্টা অবরোধও প্রত্যাহার করা হয়। গত তিন দিন ধরে চলতে থাকা কার্ফুও গত রাতে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রাণভয়ে বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া নাগাদের বিভিন্ন সংগঠন নিজেদের বাড়ি পাঠাতে শুরু করেছে।
অনশন ভেঙে রাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি করা ইরম শর্মিলা চানুও এই বিদ্বেষের পরিবেশ ঘোচানোর আবেদন জানিয়েছেন। চানু নিজে মেইতেই। কিন্তু রাজনৈতিক অভিযান শুরু করেছিলেন নাগা এলাকা উখরুল থেকে। যে ১৭টি সংগঠন মিলে শান্তির যৌথ মঞ্চ গড়েছে, শর্মিলাও তার শরিক। তাঁর মতে, ইম্ফলের বাজার এলাকাই মণিপুরের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের আয়না। সকলে সকলের সঙ্গে এগিয়ে এসে আলোচনা করলেই সমস্যা মিটে যাবে। মেইতেই নেতা নিমথৌজা ল্যানচার মতে, এই বিদ্বেষ ও বিভেদের কারণ মণিপুরের উপজাতিরা একে অন্যের ইতিহাস, সংস্কৃতি সম্পর্কে অজ্ঞ। পাঠ্যক্রমেও একে অন্যকে জানার কোনও সুযোগ থাকে না। সেই থেকেই দূরত্ব জন্ম নেয়। যাকে সহজেই তৃতীয় শক্তি বাইরে থেকে উস্কানি দিতে পারে। নাগা নেতা রোমিও বুংডনের মতে হাতের অস্ত্র আর মনের রাগ ছুঁড়ে ফেলে খোলা মনে আলোচনায় বসা হোক। সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই তা হচ্ছে না। কুকি অধ্যাপক তথা মানবাধিকার কর্মী রোজ মাংসির মতে একে অন্যের সঙ্গে কথা না হওয়ার ফলেই ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত। নাগা বনাম মেইতেইদের লড়াইতে বরাবরই কুকিরা বলির পাঁঠা হন। সব অবরোধের যন্ত্রণা সইতে হয় মাঝখানে থাকা কুকিদের।