বণিকসভার অনুষ্ঠানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ছবি— পিটিআই।
নেতাজি থাকলে দেশভাগ হত না। শনিবার দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে এমনই মন্তব্য করলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত ডোভাল। নেতাজির সাহসের প্রশংসাও শোনা যায় দোভালের মুখে। তিনি বলেন, ‘‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের সাহস ছিল মহাত্মা গান্ধীকে চ্যালেঞ্জ জানানোর।’’
বণিকসভা অ্যাসোচেমের উদ্যোগে আয়োজিত ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস স্মারক বক্তৃতা’। সেখানেই মুখ্য বক্তা হিসাবে হাজির হয়েছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, প্রচলিত স্রোতের উল্টো দিকে হাঁটার সাহস রাখতেন নেতাজি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নেতাজির মাথায় যে ধারণাটা ছিল তা হল, আমি ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করব। কিন্তু স্বাধীনতার জন্য কারও কাছে হাত পাতব না। এটা আমার অধিকার এবং আমাকে সেই অধিকার নিশ্চিত করতেই হবে। ভারত ভাগ হত না যদি সুভাষ বোস থাকতেন। জিন্নাহ পর্যন্ত বলেছিলেন, আমি একমাত্র একজনকেই নেতা হিসাবে মেনে নিতে পারি, তিনি হলেন সুভাষ বোস।’’
এনএসএ আরও বলেন, ‘‘নেতাজি বলেছিলেন, আমি পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে কোনও কিছুর সঙ্গে আপোস করব না। তিনি বলেছিলেন যে, আমি শুধু যে রাজনৈতিক দাসত্ব থেকে মুক্তি চাই তা নয়, আমি চাই মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক মনোভাবেরও আমূল বদল এবং মানুষ যেন নিজেকে মুক্ত বিহঙ্গ মনে করে।’’
ডোভালের বক্তৃতায় এসেছে মোদী-প্রসঙ্গও। তাঁর দাবি, ‘‘ইতিহাস নেতাজির প্রতি হয়তো বিরূপ।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি খুশি যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে সেই চাপা পড়া ইতিহাস পুনরুত্থাপিত হচ্ছে।’’ ডোভালের দাবি, ভারত ১৯৬২ সালের যুদ্ধে চিনের কাছে পরাজিত হয়েছিল কারণ, দেশ তখনও সেই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল না।
নেতাজির ধর্মবিশ্বাস নিয়েও নিজের মত জানিয়েছেন এনএসএ। ডোভাল বলেন, ‘‘তিনি (নেতাজি) বিশ্বাস করতেন একটি দৃঢ় অর্থনৈতিক কাঠামোয়। পরিকল্পনায় সমর্থন ছিল তাঁর। তিনি নিজে একজন অত্যন্ত ধর্মীয় মানুষ ছিলেন। সঙ্গে গীতা রাখতেন সব সময়। কিন্তু বাহ্যিক দিক থেকে তাঁর ভাবধারা ছিল অসাম্প্রদায়িক। যদিও ভিতরে ভিতরে তিনি তিনি ধর্মীয় মানুষই ছিলেন, যার বহিঃপ্রকাশ হত না।’’
যদিও ডোভালের কথায় রাজনীতির স্বাদ পাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের একটি অংশের প্রশ্ন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে থেকে ডোভাল যে ধরনের কথা বলছেন, তা কি আদৌ তাঁর পদের সঙ্গে মানানসই?