লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে দু’টি জোট যাতে না হয়, তার জন্য আহ্বান জানালেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের আজ বলেছেন, এক দিকে কংগ্রেস জোট আর অন্য দিকে তৃতীয় বা ফেডারেল জোট— এমন সম্ভাবনা সর্বশক্তি দিয়ে আটকাতে হবে। কারণ, তাতে লাভ হবে বিজেপির।
এমনকী রাহুল সকলকে বলছেন, প্রধানমন্ত্রিত্ব এখন কোনও আলোচ্য বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে হবেন তা নিয়ে প্রাক নির্বাচনী ‘ইগো’র সংঘাতে বিজেপিরই লাভ হবে। রাহুল চেষ্টা করছেন আঞ্চলিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করতে। তিনি নিজে সম্প্রতি তিন বার এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলোচনায় বসতে আগ্রহী রাহুল এবং সর্বোপরি সনিয়া গাঁধী। মমতা এখন অ-বিজেপি ও অ-কংগ্রেসি দলগুলিকে নিয়ে ফ্রন্ট গঠনের কথা বলছেন। তাঁর যুক্তি, কংগ্রেসের সঙ্গে রাজ্যস্তরে যখন তৃণমূলের সমঝোতা নেই, কংগ্রেস এবং সিপিএম জোট করে তাঁর দলের বিরুদ্ধে লড়ছে, তখন তিনি ইউপিএ-তে সামিল হবেন কী করে? মমতা ২৬ মার্চ দিল্লি আসছেন। তখন শরদ পওয়ারের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী বা রাহুল গাঁধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য সময় চাননি তিনি।
মমতা সংসদে এসে সকলের সঙ্গে দেখা করবেন। শীর্ষ কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল এবং গুলাম নবি আজাদ বলেন, মমতার সঙ্গে দেখা করতে রাহুলও আগ্রহী। কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করেন, যদি মমতা ইউপিএ-তে আসতে না পারেন, তা হলে কোনও বিকল্প জোট গড়াও তাঁর অনুচিত হবে। কারণ, তাতে বিরোধী ভোট ভাগাভাগি হয়ে বিজেপির সুবিধা হবে। কংগ্রেসের প্রস্তাব, মমতা তাদের জোটে না আসতে চাইলে বিজেপি-বিরোধী একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা যেতে পারে। মমতাকে তার আহ্বায়ক করা হতে পারে। অবশ্যই যদি তিনি সেই প্রস্তাবে রাজি হন।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, তেলঙ্গানায় তাঁদের দলই মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের প্রধান শত্রু। তাই কেসিআরের পক্ষে কংগ্রেস বিরোধিতা করা স্বাভাবিক। কিন্তু ওডিশায় বিজেপি এখন নবীন পট্টনায়কের প্রধান প্রতিপক্ষে পরিণত হয়েছে। তাই নবীন জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট গড়তে রাহুলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
কংগ্রেসের আশা, মমতা এমন অবস্থান নেবেন না যাতে বিজেপি শক্তিশালী হয়। নবান্নে কেসিআরের সঙ্গে বৈঠকের পর মমতা নিজে সে ভাবে কংগ্রেস বিরোধিতায় সরব হননি বলেই মনে করছে দলীয় হাইকম্যান্ড।