ভূমিশয্যায় রাম রহিম, আপাতত ক্ষান্ত ভক্তরা

গত কাল বিপুল বিক্রমে তাণ্ডব চালিয়েছিল রাম রহিমের ভক্তরা। সকাল হতেই ভক্তি ঘুচে গেছে অনেকের! তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পথেঘাটে থিকথিকে জলপাই উর্দি আর উদ্যত ইনসাসের নল। ভক্তি ও বিক্রম ঘুচিয়ে বাকিরাও তাই আজ শান্ত। তবু পথেঘাটে সতর্ক পুলিশ।

Advertisement

অগ্নি রায়

রোহতক শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৫
Share:

গ্রেফতার: ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে গুরমিত রাম রহিমকে হেলিকপ্টারে চাপিয়ে রোহতকের জেলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: পিটিআই।

শুক্রবার সন্ধ্যে পর্যন্ত এটা ছিল খুনি-ছিনতাইবাজ-চোর-বাটপারদের মামুলি এক জেলখানা। বেশি রাতের পরে সেটাই হয়ে গেল দুর্ভেদ্য দুর্গ!

Advertisement

স্থান, রোহতক। সুনারিয়া জেল।

এখানেই অন্য কয়েদিদের সঙ্গে ভূমিশয্যায় রাত কাটাচ্ছে জোড়া ধর্ষণ মামলায় দোষী ধর্মগুরু, গুরমিত রাম রহিম সিংহ। কয়েদি নম্বর ১৯৯৭। কাল রাতেই পঞ্চকুলা থেকে তাকে হেলিকপ্টারে উড়িয়ে আনা হয়েছে এই জেলে। তার পর থেকে গোটা চত্বর কার্যত দুর্গ। সেনা, আধা সামরিক বাহিনী এবং স্থানীয় পুলিশের তিনটি বৃত্ত ২ কিলোমিটার আগে থেকে ঘিরে রেখেছে সুনারিয়া জেলা কারাগার। ডি জি (কারা) কে পি সিংহের কথায়, ‘‘রাম রহিমের সেলের সামনে প্রহরায় রয়েছেন ৪ জন রক্ষী। কোনও বিশেষ সুবিধা তাকে দেওয়া হচ্ছে না। মেঝেতেই শুচ্ছে। অন্য কয়েদিদের মতোই সাধারণ খাবার পাচ্ছে।’’

Advertisement

গত কাল বিপুল বিক্রমে তাণ্ডব চালিয়েছিল রাম রহিমের ভক্তরা। সকাল হতেই ভক্তি ঘুচে গেছে অনেকের! তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পথেঘাটে থিকথিকে জলপাই উর্দি আর উদ্যত ইনসাসের নল। ভক্তি ও বিক্রম ঘুচিয়ে বাকিরাও তাই আজ শান্ত। তবু পথেঘাটে সতর্ক পুলিশ। যাতে কোনও গোলমাল না হয়। একজনের কথায়, ‘‘কাল যে কী হল!’’

আরও পড়ুন:বাবার ‘গুফা’য় ২০০ শিষ্যা!

ভোলবদল! নাকি অন্য কিছু?

প্রশাসনের একটা অংশ মেনে নিচ্ছে, এটা ভোলবদলই। কারণ রাম রহিম সিংহের পিছনে বরাবর পাহাড়ের মতো দাঁড়িয়েছিল হরিয়ানার বিজেপি সরকার। ৩৬টা লাশ, অসংখ্য গাড়িতে আগুন-ভাঙচুর, দেশ জোড়া সমালোচনা আর হাইকোর্টের রুদ্রমূর্তির সামনে আজ সুর পাল্টেছে হরিয়ানার মনোহরলাল খট্টারের সরকার। গোলমাল থামাতে ব্যর্থ হওয়ায় পঞ্চকুলার ডিসিপি অশোক কুমারকে সাসপেন্ড করার পাশাপাশি আদালত চত্বরে গত কাল গুরমিতের ব্যাগ বওয়ার অপরাধে বরখাস্ত করা হয়েছে ডেপুটি অ্যাডভোকেট জেনারেল গুরুদাস সিংহ সলওয়ারাকে। আরও কিছু কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে।

সে যা-ই হোক, আজ পরিস্থিতি সেনার ভাষায়, ‘বিলকুল মস্ত্!’ ভোর থেকে সিরসায় সেনা টহল দিয়েছে। গুরমিত রাম রহিমের ডেরা সচ্চা সৌদা ঘিরে রেখেছে সেনা। তবে এখনও ভিতরে ঢোকেনি। হরিয়ানা পুলিশের ডিজির কথায়, ‘‘ডেরার ভিতরে এখনও তিন-চার হাজার ভক্ত রয়েছেন। অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।’’ বিভিন্ন জায়গা থেকে ৫৫২ জন ভক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে এ কে ৪৭-এর মতো অস্ত্রও। আজ সুর নামিয়ে ডেরার চেয়ারপার্সন বিপাসনা ইনসান বলেছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মধ্যে কিছু দুর্বৃত্ত ঢুকে পড়েছিল বলেই কাল হিংসা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement