মোদী বনাম মমতা, টক্কর চলছে সমানে সমানে

বরফ গলছে? না কি গোটা ব্যাপারটাই সেয়ানে-সেয়ানে কোলাকুলি?রাজধানীর রাজনীতিতে জোর আলোচনা। কখনও হায়দরাবাদ হাউসে, কখনও রাষ্ট্রপতি ভবনে। শেখ হাসিনার দিল্লি সফরকে কেন্দ্র করে ফের কাছাকাছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:৪৭
Share:

বরফ গলছে? না কি গোটা ব্যাপারটাই সেয়ানে-সেয়ানে কোলাকুলি?

Advertisement

রাজধানীর রাজনীতিতে জোর আলোচনা। কখনও হায়দরাবাদ হাউসে, কখনও রাষ্ট্রপতি ভবনে। শেখ হাসিনার দিল্লি সফরকে কেন্দ্র করে ফের কাছাকাছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মোদী। হায়দরাবাদ হাউসে খাবার টেবিলে হাসিনা আর সুষমা স্বরাজের পাশাপাশি মমতার সঙ্গেও গল্প করেছেন মোদী। আজ রাষ্ট্রপতি ভবনের নৈশভোজেও মমতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। হাসিনার সফরের সময়ে মমতার দিল্লি আসাকে ইতিবাচক বলেই মানছেন মোদীর ঘনিষ্ঠরা। তার পর খাবার টেবিলে দু’পক্ষের হাল্কা রসিকতা! বিজেপির এক সাংসদ তো বলেই বসলেন, ‘‘আমাদের গুরুগম্ভীর প্রধানমন্ত্রী দু’দিনে যে ভাবে হেসে হেসে কথা বলছেন, সেটাই একটা বিরাট রহস্য।’’ মমতা-মোদীর সখ্য দেখে প্রায় আধ ডজন মন্ত্রী মমতাকে ফোনও করেছেন।

দুই শিবিরের সেনাপতিদের অনেকেরই মত হল— গোটা বিষয়টি আসলে সেয়ানে-সেয়ানে কোলাকুলি। মমতার শরীর-স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, আবার গত কাল আগ বাড়িয়ে তিস্তা নিয়ে মমতার সামনেই মোদী আশ্বাস দিয়েছেন হাসিনাকে। মমতাও স্পষ্ট করেন, তিনি তিস্তা চুক্তি মানতে রাজি নন।

Advertisement

জল নিয়ে মতভেদ যে ভাবে প্রকাশ্যে এসেছে, সেই সুর রয়ে গিয়েছে রাজনীতিতেও। তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘অনেকেরই ধারণা হয়েছিল, সারদা ও নারদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মমতাকে ভয় দেখিয়ে দিয়েছেন। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মমতা দিল্লি এসে আত্মসমর্পণ করবেন। বাস্তবে কিন্তু তা হয়নি। এত সহজে তাঁকে ঘায়েল করা যায় না।’’

আরও পড়ুন: গো-রক্ষার নামে তাণ্ডবের নিন্দা করলেন মোহন ভাগবতও

মোদী শিবিরও মনে করছে, মমতাকে রাজি করিয়ে তিস্তা চুক্তিটা সই করা গেলে বিধানসভা ভোট পর্যন্ত আবার সারদা-নারদ করা যেতে পারে। সিবিআই তদন্তের ফাইল সহজে বন্ধ হয় না। বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন, সিবিআই তদন্ত লঘু করার প্রশ্ন উঠছে না।
মমতাও পাল্টা বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করছে। এই রাজনীতিকে সর্বশক্তি দিয়ে রুখব। আপসের প্রশ্ন উঠছে না।’’

এরই মধ্যে অবশ্য বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রস্তাব থেকে শিলিগুড়িতে পাসপোর্ট অফিস— বিভিন্ন বিষয়ে মমতা ও মোদীর কথা চলছে। অনেকেই একে দু’পক্ষের কৌশলগত বোঝাপড়া বলছেন। তৃণমূলের এক নেতার ব্যাখ্যা, মমতা বুঝছেন, উত্তরপ্রদেশের ভোটের পরে এই সময়টা মোদী-বিরোধী রাজনীতির জন্য সঠিক নয়। তবে নেত্রী জানেন, রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু মানুষের কথা মাথায় রেখেই চলতে হবে তাঁকে। তাই কিছুটা অপেক্ষা করে মোদী-বিরোধী রাজনীতিতে প্রধান ভূমিকা নিতে এগিয়ে যাবেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement