অতীত: ‘এ ভাবেই রবীন্দ্রজয়ন্তী পালিত হত।’ ২০১১ সালের এই ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন জহর সরকার।
গত বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দাড়ির দৈর্ঘ্য এবং রং দেখে রাজনৈতিক শিবিরে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল, তিনি কি রবীন্দ্রনাথ সাজতে চাইছেন! তখন তাঁর রবি ঠাকুর (নিজস্ব উচ্চারণে) বিনা বক্তৃতা (মূলত বাংলায়) নাই! অযোধ্যার রামমন্দিরের শিলান্যাসে তিনি ধুতি পরিহিত। তাঁর ‘আত্মনির্ভর’ ভারতের উদাহরণে রবীন্দ্রনাথ।
এ বছরে বাংলায় ভোট অতিক্রান্ত। সকালে নিয়মমাফিক রবীন্দ্র জয়ন্তীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সংসদের সেন্ট্রাল হলে অনাড়ম্বরে প্রায় জনহীনভাবে কোনও ক্রমে মালা পরানো হল রবীন্দ্রনাথের ছবিতে। সামনে শুধু চার জন। কেন্দ্রীয় মহিলা উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার মুখ্য আহ্বায়ক সুখেন্দুশেখর রায়, লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এক অফিসার উপস্থিত থাকলেন। কোনও পূর্ণমন্ত্রী, এমনকি বিজেপি-সহ কোনও দলের কোনও সাংসদেরই দেখা মেলেনি সেন্ট্রাল হলে।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, বিষয়টি আগাম আঁচ করেছিল তৃণমূল। দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে সুখেন্দুশেখর রায়, শুধুমাত্র এই অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্যই দিল্লি এসেছেন আজ। গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। সুখেন্দুশেখরের বক্তব্য, “বিজেপি নিছকই সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির জন্য রবি ঠাকুরকে ব্যবহার করে, এটা আজ স্পষ্ট হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী দূরস্থান, বাংলার কোনও বিজেপি সাংসদকেও দেখা গেল না আজ। এ ঘোর লজ্জার।” অন্য দিকে, তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “বাংলায় গিয়ে বিজেপি সাংসদেরা রবি ঠাকুরের কবিতা আউড়ে বাংলার সংস্কৃতির বড়াই করেন। সেটা কি তা হলে ভোট পাওয়ার কৌশল? বাংলার বিজেপি নেতারা তো ঘনঘন দিল্লি যান, সেখানে থাকেন। আজ তাঁদের টিকির দেখা পাওয়া গেল না কেন?”
আজ মোদী তাঁর টুইটে বলেছেন, “গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে তাঁর জন্মজয়ন্তীতে প্রণাম জানাই। তাঁর কাজ এবং চিন্তা লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রেরণা দিয়ে চলেছে। তিনি আমাদের দেশের, সংস্কৃতির এবং মূল্যবোধের জন্য গর্বিত হতে শিখিয়েছেন। শিক্ষা এবং সামাজিক সশক্তিকরণের উপর জোর দিয়েছেন।”