প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁকে নিশানা করে গত কালই তোপ দেগেছিল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। তার ২৪ ঘণ্টা পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, বরদাস্ত করা হবে না হিংসা। আইন দোষীদের সাজা দেবেই।
ডেরা সচ্চা সৌদার ভক্তদের তাণ্ডবের পর মোদীর উদ্দেশে বিচারপতিরা বলেন, ‘‘উনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির নন।’’ অভিযোগ, ভোটের টানে ডেরা-ভক্তদের হিংসায় ছুট দেওয়া হয়েছে। সেই অভিযোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে আজ প্রধানমন্ত্রী ব্যবহার করলেন রেডিওতে ‘মন কি বাত’-এর মঞ্চ। সেখানে মোদীর মন্তব্য, ‘‘লালকেল্লা থেকেও বলেছি, আস্থার নামে হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। সে আস্থা সম্প্রদায়, রাজনৈতিক বিচারধারা, ব্যক্তির প্রতি হোক না কেন। হিংসা কোনও সরকার বরদাস্ত করবে না। আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই।’’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আইনের সামনে সকলকেই ঝুঁকতে হবে। আইন জবাবদিহি তৈরি করবে। দোষীকে সাজা দেবেই।’’
প্রধানমন্ত্রী কোথাও হরিয়ানা কিংবা রাম রহিমের নাম উচ্চারণ করেননি। কিন্তু আদালত যে ভাষায় সমালোচনা করেছে, তার পর মোদীকে এ কথা বলতে হল। বিরোধীরা এতে খুশি নয়। কংগ্রেসের সন্দীপ দীক্ষিত বলেন, ‘‘মোদী এমন কথা বলেন, তার পর নিজেদের লোকদেরই সন্ত্রাস ছড়াতে ছুট দেন। ওই সব লোকেরা জানেন, প্রধানমন্ত্রী শুধু বলেন, পদক্ষেপ করেন না। আদালতকে সে কারণেই হস্তক্ষেপ করতে হল।’’
আরও পড়ুন:
‘বাবা’র কাছে এসে বৌ হারালেন কমলেশ
শক্ত হাতে রাশ ধরে সফল ক্যাপ্টেন
কংগ্রেসের এক নেতার ক্ষোভ, ওই রেডিও-বার্তাতেই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সংবিধানে সকলের সুবিচারের ব্যবস্থা রয়েছে। ‘আপাত-নিরীহ’ এই মন্তব্য আসলে ডেরা-প্রধানের প্রতি বার্তা। আজও হরিয়ানার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, রাম রহিমের মেয়ের দাবি— বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা ছিল মামলা তুলে নেওয়ার। তা হলে রাম রহিমকে জেলে পাঠিয়ে পরে তাঁকে বের করে নেওয়ার কৌশল রচনা হয়েছে? আর ১৪৪ ধারা সত্ত্বেও কী করে এত ভিড়কে পঞ্চকুলায় ঢুকতে দেওয়া হল, সেই রহস্যের জবাব তো এখনও দিতে পারেনি হরিয়ানা সরকার।
বিজেপি অবশ্য মোদীকে নিশানা করে আদালতের মন্তব্যে বেজায় ক্ষুব্ধ। দলের শীর্ষ নেতাদের মতে, এমন কথা বলা আদালতের কাজ নয়। বরং তাদের কাজ, সব পক্ষের বক্তব্য শুনে রায় দেওয়া। কিন্তু আদালতের মর্যাদা রাখতেই প্রকাশ্যে এ কথা বলছেন না দলের নেতারা। বিজেপির কেউ কেউ বিচারপতির পরিবারের সঙ্গে কংগ্রেসের যোগসূত্র খুঁজছেন। যেমন বিজেপির তথ্য-প্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। এই বিচারপতিদের কারও ছেলেকে কী ভাবে পঞ্জাবের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ রাজ্যের আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ করেন, তা নিয়ে টুইটারে সরব মালব্য।