সংসদ ভবনের ফাইল চিত্র।
লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আদৌ টিকবে কি না, তথা ভোটাভুটিতে বিরোধীদের শক্তি কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে বিতর্ক চলছেই। বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে শুক্রবার আলোচনা ও ভোটাভুটি হওয়ার কথা।
ইতিমধ্যে বিরোধীদের শক্তি ক্ষীণ হতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক মহলের খবর, নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দল (বিজেডি) ও এআইডিএমকে শুক্রবারের অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত থাকতে পারে। তেলুগু দেশম পার্টির তরফে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হলেও দলীয় সংসদ দিবাকর রেড্ডিও বুধবার জানিয়েছিলেন, শুক্রবার লোকসভার অধিবেশন তিনি উপস্থিত থাকবেন না। এবার সঙ্গে জুড়ল বিজেডি ও এআইডিএমকে-র নামও।
তেলুগু দেশমের আনা এই অনাস্থা প্রস্তাবে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধীরা সমর্থন জানালেও এই প্রস্তাবে সায় নেই শিবসেনারও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার নিজেই জানিয়েছেন সেকথা। ভোটাভুটিতে শিবসেনার অবস্থান সম্পর্কে অনন্ত কুমার সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘এনডিএ ঐক্যবদ্ধ। অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধেই ভোট দেবেন এনডিএ-র শরিকরা।’’ সুতরাং মনে করা হচ্ছে, শিবসেনা বিজেপির পাশেই থাকছে।
বুধবার বিরোধীদের শক্তি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী সনিয়া গাঁধী প্রশ্ন ছুড়েছিলেন, ‘‘কে বলেছে আমাদের পক্ষে সংখ্যা নেই?’’ বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গে সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অনন্ত কুমার বলেন, ‘‘সনিয়াজি অঙ্কে কাঁচা। ১৯৯৬ সালেও কংগ্রেস একইরকম গণনা করেছিলেন, আর তার পর কী হয়েছিল, তা সবাই জানেন। এনডিএ শরিকরা প্রত্যেকেই অনাস্থার বিরুদ্ধে ভোট দেবেন।’’
আরও পড়ুন: অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত লোকসভায়, আটঘাট বাঁধছে বিরোধীরা
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শিবসেনা একাই লড়বে বলে জানিয়েছিলেন, দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। তবে এনডিএ থেকে সমর্থন সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেনি তারা। মুম্বইয়ে পুরভোটে বিজেপি ও শিবসেনা আলাদাভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিজেপির তরফে শিবসেনার প্রার্থীকেই মেয়র পদ মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়।
শুক্রবার অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে সরকার পড়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে মনে করা হচ্ছে। ৫৩৫ সদস্যের লোকসভায় ৩১৩ জন সদস্যই এনডিএ-র শরিক। এর মধ্যে বিজেপির দখলেই রয়েছে ২৭৪টি আসন, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ম্যাজিক ফিগার ২৬৮-র তুলনায় অনেকটাই বেশি।
আগামিকাল অর্থাৎ ২০ জুলাই মোদী সরকারের চার বছরের ‘অপশাসন’-এর তালিকা দেশের সামনে তুলে ধরতে চাইবেন বিরোধীরা। অনাস্থা বিতর্কে যাবতীয় আক্রমণের জবাব মোদীই দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাই সরাসরি বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করার সুযোগ বিরোধীরা ছেড়ে দেবেন না বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। বিরোধীদের আশা, শিবসেনা তাঁদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবেই সমর্থন জানাবেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য বিজেপির পাশে শিবসেনার থাকারই ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: দক্ষদেরই স্থান রাহুলের টিমে