গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তিনি চা বিক্রেতা! গুজরাতের বডনগর স্টেশনে বাবার চায়ের দোকানে কাজ করে অতি কষ্টে দিন গুজরান করেছেন। ২০১৪-র লোকসভা ভোটের প্রচারে বারেবারেই এমন দাবি করতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও তাঁর দাবি নিয়ে তখনই সংশয় প্রকাশ করেছিল একাধিক মহল। এ বারে বিষয়টি নিয়ে পশ্চিম রেলে কাছে জানতে চাইলে তারা জানিয়ে দিল, এই বিষয়ে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই! রেলের এই জবাবের ভিত্তিতে এক ব্যক্তির আবেদন খারিজ করে দিল কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন।
হরিয়ানার একটি আদালতের আইনজীবী তথা সমাজকর্মী পবন পারীক তথ্যের অধিকার আইনে তথ্য কমিশনের কাছে মোদীর বাবা দামোদরদাস মোদীর চায়ের দোকান সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন।
দু’বছর আগে পবন পশ্চিম রেলের সিপিআইও-র কাছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বাবার সেই চায়ের দোকান সম্পর্কে জানতে চান। দোকানটি কত দিনের জন্য লিজ নেওয়া হয়েছিল, কবে রেল ওই চায়ের দোকানের লাইসেন্স দিয়েছিল, জাতীয় কয়েকটি প্রশ্ন করেছিলেন পবন। এ বিষয়ে ‘সার্টিফায়েড কপি’ও চান ওই সমাজকর্মী। রেলের তরফে কোনও উত্তর না-মেলায় কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনে ‘ফার্স্ট অ্যাপিল’ করেন পবন। তারও উত্তর না-মেলায় ফের আবেদন করেছিলেন পবন।
আরও পড়ুন: সনিয়া ও মমতার ডাকে বৈঠক আজ, নিট-জেইই নিয়ে একজোট বিরোধীরা
আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্কে কমেছে খরচ, থমকে বৃদ্ধির হার
যদিও পশ্চিম রেলের সিপিআইও-র দাবি, চলতি বছরের ১৭ জুনের আগে তথ্যের অধিকার আইনে এবং ‘ফার্স্ট অ্যাপিল’ হিসেবে কোনও আবেদন পৌঁছয়নি তাঁদের কাছে। এর পরেই রেলের তরফে জানানো হয়, আবেদনকারী যে তথ্য জানতে চেয়েছেন, তা অনেক পুরনো। সেই সময়ে আমদাবাদ ডিভিশনে এ ধরনের কোনও তথ্য নথিভুক্ত করা হত না।
এর পরেই পবনের আবেদনে ইতি টেনে দেন কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার অমিতা পাণ্ডবে। পাশাপাশি তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ১৭ জুনের আগে তাদের কাছে ‘আরটিআই’ এবং ‘ফার্স্ট অ্যাপিল’ পৌঁছয়নি বলে রেল যে দাবি করেছে, তা হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। পাশাপাশি মোদীর বাবার চায়ের দোকান সম্পর্কিত তথ্যও যে রেলের কাছে নেই, তা-ও হলফনামায় জানানোর জন্য রেলকে নির্দেশ দিয়েছেন তথ্য কমিশনার।
২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে বিদেশের ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কালো টাকা উদ্ধার করে প্রত্যেক নাগরিকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। সেই বিষয়েও জানতে চেয়ে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের (পিএমও)-র কাছে আবেদন করেছিলেন পবন। পিএমও-র জবাবে সন্তুষ্ট না-হওয়ায় তথ্যের অধিকার আইনে আবেদন জানান তিনি। সেই বারেও অবশ্য পবনের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল।