Indian Army

‘আমাদের সেনার টহলদারি রোখার শক্তি নেই কারও’, রাজ্যসভায় বললেন রাজনাথ

প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘এলএসি-র পুরনো পোস্টগুলিতে ভারতীয় সেনার টহলদারির পথে বাধা দিয়েছিল চিনা ফৌজ। সেটাই সঙ্ঘাতের কারণ।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:২৭
Share:

এলএসি-তে বদলাবে না ভারতীয় সেনার ‘পেট্রোলিং প্যাটার্ন’।

দীর্ঘ দিন ধরে প্রচলিত টহলদারির পথেই লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) নজরদারি চালিয়ে যাবে ভারতীয় সেনা। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এ কথা জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘পৃথিবীর কোনও শক্তি ভারতীয় সেনার টহলদারিতে (পেট্রোলিং) বাধা দিতে পারবে না।’’

Advertisement

চিনের চুক্তিভঙ্গের কারণেই যে লাদাখ সীমান্তে সমস্যার সূত্রপাত, সে কথা এ দিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন রাজনাথ। তিনি বলেন, ‘‘এলএসি-র পুরনো পোস্টগুলিতে ভারতীয় সেনার টহলদারির পথে বাধা দিয়েছে চিনা ফৌজ। সেটাই সঙ্ঘাতের কারণ।’’ সেই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ‘‘লাদাখে এলএসি বরাবর টহলদারির পদ্ধতিতে (পেট্রোলিং প্যাটার্ন) কোনও বদল হবে না।’’

রাজ্যসভায় এ দিন কংগ্রেস সাংসদ তথা প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি জানতে চান, চিনা বাহিনীর এলএসি লঙ্ঘনের পর পুরনো পথে ভারতীয় সেনার টহলদারি চালানো সম্ভব কি না। জবাবে রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘পুরনো পথে ভারতীয় সেনার টহল কেউ রুখতে পারবে না।’’ সেই সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, লাদাখের প্রায় ৩৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল অবৈধ ভাবে দখল করে নিয়েছে চিন (১৯৬২ সালের যুদ্ধের সময়)। পাকিস্তান পরবর্তী কালে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৫,১৮০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বেআইনি ভাবে চিনকে খয়রাতি করেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: চিনা নজরদারির তদন্ত-রিপোর্ট ৩০ দিনেই, জানালেন বিদেশমন্ত্রী

মে মাসের শুরুতে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা, গোগরা পোস্ট, হট স্প্রিং, দেপসাংয়ের পাশাপাশি প্যাংগং হ্রদের উত্তরের ফিঙ্গার এরিয়ায় এলএসি পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢোকে চিনা ফৌজ। মে মাসের গোড়ায় ফিঙ্গার এরিয়া-৮ পর্যন্ত (এলএসসি) টহল দিয়েছে ভারতীয় সেনা। কিন্তু এর পরেই চিনা ফৌজ প্রায় আট কিলোমিটার এগিয়ে ফিঙ্গার এরিয়া-৪ পর্যন্ত চলে আসে।

আরও পড়ুন: ‘প্রথমে ডিজিটাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দেওয়া দরকার’, সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র

১৫ জুন গালওয়ানে সংঘর্ষের পরে সেনা ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার ভিত্তিতে জুলাই মাসে তারা কিছুটা পিছিয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি প্যাগং লেকের পাড়ে ফিঙ্গার এরিয়া-৪-এর কাছে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) রাস্তা ও শিবির নির্মাণ করছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর। উত্তর লাদাখের দৌলত বেগ ওল্ডি বায়ুসেনা ঘাঁটির অদূরে দেপসাং উপত্যকায় এলএসি পেরিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার ঢুকে এসে লাল ফৌজ ‘ওয়াই-জংশনে’ ডেরা বেঁধেছে। ফলে ভারতীয় বাহিনীর পেট্রোলিং পয়েণ্ট ১০ এবং ১৩-তে যাওয়া কার্যত বন্ধ।

আরও পড়ুন: চিনা আগ্রাসনেই এলএসিতে উত্তেজনা বেড়েছে, লোকসভায় রাজনাথ

প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ তীরে ২৯ অগস্ট রাতে ভারতীয় সেনার ফরওয়ার্ড পোস্ট দখল করতে এসে প্রতিরোধের মুখে পিছু হটে চিনা সেনা। এর পরে গত দু’সপ্তাহে সেখানে পিএলএ-র সমাবেশ বাড়ানো হয়েছে বলে সেনা সূত্রের খবর। অগস্টে এলএসি বরাবর ৩৫ হাজার চিনা বাহিনী মোতায়েন থাকলেও সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার।

সোমবার লোকসভায় বেজিংয়ের বিরুদ্ধে সমঝোতা ভাঙার অভিযোগ তুলে রাজনাথ বলেছিলেন, ‘‘ক্রমাগত আগ্রাসনের চেষ্টা ও স্থিতাবস্থা নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে চিন। তাদের এই প্রয়াস এলএসি সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা ও প্রোটোকলের বিরোধী। লোকসভায় বিরোধীরা এলএসি পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ না পেলেও এদিন সংসদের উচ্চকক্ষে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement