ছবি: পিটিআই
নতুন জোটে পুরনো মুখ্যমন্ত্রীকে পেল বিহার বিধানসভা। একই সঙ্গে পেল ‘তেজস্বী’ বিরোধী নেতাকেও।
বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে গত কাল শপথ নেওয়ার পরে আজই বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করেছিলেন নীতীশ কুমার। আস্থা ভোট নিতে। প্রত্যাশামতোই ১৩১-১০৮ ভোটে জিতেছে তাঁর সরকার। কিন্তু রাজ্যপাট হারিয়েও এ দিন বিধানসভায় তেজ দেখালেন লালু-পুত্র তেজস্বী।
আস্থা ভোটের আলোচনায় আরজেডি-কংগ্রেস কী ভাবে আক্রমণ শানাতে পারে, সে আন্দাজ নীতীশ শিবিরের ছিল। পাল্টা ছকও সাজিয়েছিল তারা। শাসক পক্ষের বক্তা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল দুই বিজেপি নেতা নন্দকিশোর যাদব এবং সুশীল মোদীকে— গত তিন মাস ধরে যাঁরা লালু পরিবারের একের পর এক ‘দুর্নীতির ঘটনা’ জনসমক্ষে এনেছিলেন। নীতীশ নিজের জন্য রেখেছিলেন মাত্র দশ মিনিট।
কিন্তু ২৮ বছরের অনভিজ্ঞ তরুণের হাতেই যে বিরোধীরা আক্রমণের রাশ তুলে দেবে, সেটা বোধহয় আঁচ করতে পারেনি শাসক শিবির। বেলা ১১টায় বিধানসভায় ঢোকেন তেজস্বী। ততক্ষণে শাসক-বিরোধী সব বিধায়কেরাই নিজের নিজের আসনে বসে গিয়েছেন। প্রেস গ্যালারিতে ঠাঁই নাই অবস্থা।
নীতীশ আস্থা প্রস্তাব পেশ করার পরে তেজস্বীই প্রথম বক্তা। আরজেডি জানিয়ে দেয়, তাদের পক্ষ থেকে ওই একজনই বলবেন। স্পিকার সময় বরাদ্দ করেছিলেন ১৫ মিনিট। তেজস্বী বললেন প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা। আর পুরো সময়টাই তীব্র আক্রমণ শানালেন নীতীশের দিকে। বললেন, ‘‘এক জন ব্যক্তির ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে বিহারে গত চার বছরে বার বার সরকার পরিবর্তন হয়েছে।’’
তেজস্বীর অভিযোগ, নীতীশ এমন শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন যারা অনুন্নত, দলিত এবং সংখ্যালঘু বিরোধী। এ কথা বলেই তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আমরা নীতীশজিকে চিনতে পারিনি। উনি আসলে সঙ্ঘ-যুক্তিতেই বিশ্বাসী।’’ তবে একই সঙ্গে তেজস্বীর মন্তব্য, ‘‘যা হয়েছে, ভালই হয়েছে। নীতীশজি ‘হে রাম’ থেকে ‘জয় শ্রীরাম’-এ চলে গিয়েছেন।’’ শাসক বেঞ্চ থেকে ভেসে আসে টিকা-টিপ্পনি। বিজেপি বিধায়কদের দিকে ফিরে সহাস্য তেজস্বী বলেন, ‘‘দুধ থেকে যে ভাবে মাছি তুলে ফেলে দেয়, সে ভাবেই আপনাদের ফেলে দিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। ভুলে গিয়েছেন বোধহয়।’’ শেষে বললেন, ‘‘আমাকে কিন্তু ইস্তফা দিতে বলা হয়নি। বললে নিশ্চয় ভেবে দেখতাম।’’
নীতীশ কিন্তু এ দিন তাঁর বক্তৃতায় তেজস্বীর তোলা প্রশ্নের জবাব দেননি। শুধু বলেছেন, ‘‘আমাকে কারও কাছ থেকে ধর্মনিরপেক্ষতার পাঠ নিতে হবে না।’’