নীতীশ কুমার। ফাইল চিত্র
দূরদর্শীই বটে! রাজনীতির জল মাপার ক্ষেত্রে তাঁর তুলনা তিনি নিজেই।
কখনও সুযোগ বুঝে কংগ্রেস বা প্রতিপক্ষ লালুর গলা জড়িয়ে ধরা, কখনও বা পুরনো বন্ধু বিজেপির সঙ্গ নেওয়া— আগাম হাওয়া বুঝে অবস্থান বদল করতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার।
এ হেন ‘দূরদর্শী’ নীতীশ কুমারের চোখ এ বার মাপতে পারল তিন হাজার বছর আগের ইতিহাসকে। তাঁর সেই ‘নজরে’ ভরসা রেখেই রাজ্যের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষকরা খোঁজ পেলেন প্রায় তিন হাজার বছর পুরনো কিছু নিদর্শনের।
তাঁর আমলে রাজ্যে উন্নয়ন কেমন হয়েছে, তা প্রচার করতেই রাজ্য সফরে নেমেছেন নীতীশ।অভিযানের নাম ‘বিকাশ সমীক্ষা যাত্রা’। শুক্রবার ওই যাত্রা উপলক্ষে তিনি গিয়েছিলেন পটনা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে শেখপুরা জেলার একটি গ্রামে। সেখানে গিয়ে তিনি হেঁটে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন গ্রামের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। আর তখনই গ্রামের মধ্যে একটি বিশাল মাটির ঢিপি নজরে আসে মুখ্যমন্ত্রীর।
আরও পড়ুন: ভিক্ষুক খুঁজে দিলেই মিলবে ৫০০ টাকা!
ওই ঢিপির ভিতর কী আছে? মুখ্যমন্ত্রীর সন্দেহ হয়। আর সে জন্যই তিনি প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগকে ঢিপিটি সম্পর্কে যাবতীয় অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দেন। সেই মতো খোঁড়াখুড়ি করা শুরু হয়। আর তাতেই মিলল প্রায় তিন হাজার বছর পুরনো সেরামিকের ভাঙা পাত্র। ওই ভাঙা জিনিসের প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব যথেষ্ট বলেই প্রাথমিক গবেষণার পর জানিয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা।
শেখপুরা জেলার একটি গ্রামে নীতীশ কুমার। ছবি টুইটারের সৌজন্যে।
কে পি জায়সবাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা বিজয়কুমার চৌধুরী সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, রবিবার খনন কাজ চালানো হয়। সেখান থেকে কালো এবং লাল রঙের ভাঙা পাত্রের কিছু টুকরো মিলেছে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে এগুলি প্রায় তিন হাজার বছরের (এক হাজার খ্রিস্টপূর্বাব্দ সময়ের) পুরনো বলে মনে করা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: ঝাঁপ দেব! পাঁচ তলার কার্নিসে ছ’ঘণ্টা বসে টেনের ছাত্র
খননে বুদ্ধ এবং বিষ্ণুর প্রাচীন মূর্তিও উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজয়কুমার। উদ্ধার হওয়া সব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি পটনা মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে। রাজ্য সরকার এগুলি সংরক্ষণের জন্য পরবর্তীতে পদক্ষেপ করবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব অঞ্জনিকুমার সিংহ।
এমনিতেই ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্বের প্রতি নীতীশ কুমারের আগ্রহের কথা বেশ পরিচিত। তাঁর নির্দেশ এবং অনুপ্রেরণাতেই মাস কয়েক আগে পটনায় উদ্বোধন হয় ‘বিহার মিউজিয়াম’-এর।