নীতীশ কুমার (বাঁ দিকে) এবং লালন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
জল্পনা ছিলই। জল্পনাকে সত্যি করে জেডিইউ-র শীর্ষপদ থেকে ইস্তফা দিলেন দলের প্রবীণ নেতা লালন সিংহ। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।
দিল্লিতে জেডিইউ-র দু’দিনের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক চলছে। শুক্রবার বৈঠকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়ে দলের জাতীয় সভাপতি পদে নীতীশের নাম প্রস্তাব করেন লালন। কর্মসমিতির বাকি সদস্যেরাও তাতে সম্মতি জানান।
আগেই জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছিল যে, বৈঠকে ইস্তফা দিতে পারেন লালন। যদিও প্রকাশ্যে তেমন কোনও সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেনি জেডিইউ। বরং বিহারের অন্যতম শাসকদলের তরফে বলা হয়েছিল, এটা রুটিন বৈঠক। প্রতি বছরই হয়ে থাকে। তাই এর মধ্যে জল্পনা খোঁজার কোনও উপাদান নেই। কিন্তু বিহার এবং জাতীয় রাজনীতিতে নীতীশের সঙ্গে লালনের দূরত্ব নিয়ে চর্চা শুরু হয়। এমনকি দল থেকেই ইস্তফা দিয়ে লালন বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন, এমন কথাও শোনা যায়।
লালন অবশ্য দল অটুট রয়েছে, এমনটা দাবি করে বলেছিলেন, “নীতীশ কুমার আমাদের নেতা। জনতা দল যেমন ইউনাইটেড (ঐক্যবদ্ধ) ছিল, তেমনই ইউনাইটেড থাকবে। যদি আমি ইস্তফা দিই, তবে সংবাদমাধ্যমকে জানাব।’’ শুক্রবার দলের শীর্ষপদ ছাড়লেও লালন জেডিইউ ছাড়ছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
তবে লালনের বিরুদ্ধে নিজের ঘনিষ্ঠমহলে একাধিক অভিযোগ জানাচ্ছিলেন নীতীশ। জেডিইউ সূত্রে খবর, নীতীশ ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছিলেন, বিরোধী জোটের অন্যতম প্রধান মুখ হিসাবে তাঁকে তুলে ধরার জন্য লালনের যে ‘সক্রিয়তা’ দেখানোর প্রয়োজন ছিল, তা দেখানো হয়নি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার তাঁর কোনও বাসনা নেই, বহু বার প্রকাশ্যে এ কথা দাবি করলেও বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র আহ্বায়ক পদে বসতে চেয়েছিলেন নীতীশ। এর পর বিরোধী নেতা-নেত্রীর সঙ্গে দেখা করে জোটের সলতেও পাকিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিরোধী জোট সূত্রে জানা যায়, জোটের নামকরণ নিয়ে, এমনকি প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসাবে মল্লিকার্জুন খড়্গের নাম প্রস্তাব করা নিয়ে ‘অসন্তুষ্ট’ নীতীশ ক্রমশ ‘ইন্ডিয়া’য় সক্রিয়তা কমিয়েছেন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর মান ভাঙাতে সম্প্রতি তাঁকে ফোন করেন রাহুল গান্ধী। এ বার লোকসভা ভোটের আগে দলের কৌশল নির্ধারণের সব রাশ নীতীশ নিজের হাতেই রাখতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে।