‘চাচা-ভাতিজা’ ফের পাশাপাশি।
পুরনো তিক্ততা ভুলে বিহারের রাজনীতিতে ফের একসঙ্গে ‘চাচা-ভাতিজা’! বিজেপি-সঙ্গ ত্যাগ করে ফের আরজেডি, কংগ্রেস, বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়তে চলেছেন নীতীশ কুমার। পটনায় আজ শপথগ্রহণ নয়া মন্ত্রিসভার। ‘চাচা’ নীতীশ মুখ্যমন্ত্রী আর ‘ভাতিজা’ তেজস্বী যাদব উপমুখ্যমন্ত্রী, তা প্রায় ঠিকই হয়ে গিয়েছে। মন্ত্রিসভায় অন্য দলগুলির তরফে ক়ত জন মন্ত্রী হতে পারেন, কারা কারা মন্ত্রী হতে পারেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আজ, বুধবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে অষ্টম বারের জন্য শপথগ্রহণ করতে চলেছেন নীতীশ কুমার।
মহাগঠবন্ধন সূত্রের খবর, জোটের বৃহত্তম দল হিসাবে সর্বাধিক সংখ্যক দফতর পেতে চলেছে লালুপ্রসাদের দল আরজেডি। তাদের প্রায় ২০ জন বিধায়ক মন্ত্রিসভায় আসতে চলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ছাড়াও জেডি (ইউ)-র তরফে ১১ থেকে ১৩ জন মন্ত্রী হতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। শাসক জোটের আরও দুই শরিক, কংগ্রেস এবং জিতনরাম মাঝির দল হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার তরফে যথাক্রমে ৪ জন এবং ১ জন মন্ত্রী হতে চলেছেন। রাজ্যের একমাত্র নির্দল বিধায়ক সুমিতকুমার সিংহও মন্ত্রিসভায় আসতে চলেছেন বলে সূত্রের খবর।
বুধবার সকাল পর্যন্ত মহাগঠবন্ধন সূত্রে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে জেডি (ইউ)-র যে সব বিধায়ক এনডিএ মন্ত্রিসভায় ছিলেন, তাঁদের প্রায় প্রত্যেকেই নতুন মন্ত্রিসভায় থাকতে চলেছেন। মন্ত্রিসভার নয়া সদস্য হিসাবে উপেন্দ্র কুশওয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে বলে জানিয়েছে জেডি (ইউ)-র একাংশ। আরজেডি-র তরফে উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব ছাড়াও মন্ত্রী হতে পারেন লালুর জ্যেষ্ঠপুত্র তেজপ্রতাপ যাদব, অলোককুমার মোহতা, চন্দ্রশেখর, সুনীলকুমার সিংহ প্রমুখ। কংগ্রেসের যে সব বিধায়ক মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে মদনমোহন ঝা, শাকিল আহমেদ, রাজেশ রাম, অজিত শর্মা প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার তরফে মন্ত্রী হতে পারেন সন্তোষকুমার সুমন।
মন্ত্রিসভায় কোন দলের হাতে কোন গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব থাকবে, তা নিয়ে আরজেডির প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ নেতা জানান, জোটের বৃহত্তম দল হয়েও ‘বিজেপিকে রোখার স্বার্থে’ আরজেডি নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু তার বিনিময়ে তারা যে অর্থ কিংবা স্বরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে, তা নিয়ে লুকোছাপা করতে চাইছে না লালুর দল। আরজেডি নেতা ইঙ্গিত দেন, বিধানসভার স্পিকারের পদটিও পেতে চলেছে ‘লন্ঠন’-ধারী দল। কংগ্রেস স্পিকার পদের জন্য তদ্বির করলেও, তাদের আবেদন নাকচ করে দেওয়া হবে বলেই সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, ২৪৩ আসনবিশিষ্ট বিহার বিধানসভায় জেডি (ইউ)-র বিধায়ক সংখ্যা ৪৫, কংগ্রেসের ১৯, সিপিআইএমএল লিবারেশনের ১২, আর সিপিআই এবং সিপিএম উভয় দলেরই দু’জন করে বিধায়ক আছেন। মহাগঠবন্ধনের বৃহত্তম শরিক আরজেডি-র ৭৯ জন বিধায়ক রয়েছেন, হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার চার জন বিধায়ক রয়েছেন। নির্দল বিধায়ক রয়েছেন এক জন। পক্ষান্তরে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৭।