নিকোলাউস ফেস্ট।
কাশ্মীর না গিয়ে দিল্লি থেকেই দেশে ফিরে গিয়েছিলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের চার জন সদস্য। কী কারণে ফিরে যাওয়া, তা নিয়ে অবশ্য প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি সেই নেতারা। বাকি ২৩ জনের মধ্যে দু’দিন কাশ্মীর ঘোরার পরে আজ বেসুরে বাজলেন প্রতিনিধি দলের জার্মান সদস্য নিকোলাউস ফেস্ট। অন্য প্রতিনিধিরা যখন নরেন্দ্র মোদী সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তখন প্রশংসার বদলে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন ফেস্ট। বিরোধীরা বলছেন, বাছাই করা প্রতিনিধিদের প্রত্যেকেই যেখানে গোঁড়া দক্ষিণপন্থী বলে পরিচিত, সেখানে ফেস্টের এই মুখ খোলা তাৎপর্যপূর্ণ। কার্যত দলছুট ফেস্ট বলেন, ‘‘ভারত সরকার যদি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের কাশ্মীরে যেতে দেয়, তা হলে এ দেশের বিরোধী নেতাদেরও কাশ্মীরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।’’ কাল বিদেশিদের সফর চলাকালীন একের পর এক হামলা-বিক্ষোভের পরে আজ ফেস্টের ওই বক্তব্যে আরও একপ্রস্ত অস্বস্তিতে কেন্দ্র।
গত ৫ অগস্ট কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হওয়ার পরেই উপত্যকায় সফরে বিধিনিষেধ জারি করেছিল কেন্দ্র। বিশেষ করে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের। তাই পরবর্তী সময়ে কংগ্রেসের রাহুল গাঁধী, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের ডি রাজা দফায় দফায় উপত্যকায় যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শ্রীনগর বিমানবন্দরেই বাধা পেয়ে ফিরে আসতে হয় তাঁদের। দেশীয় নেতাদের যাওয়া যেখানে বারণ, সেখানে বিদেশিদের কাশ্মীর সফর নিয়ে প্রতিবাদে সরব হন বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারির কটাক্ষ, ‘‘এ দেশের সাংসদদের বরং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। তবেই কাশ্মীরে যাওয়া যাবে।’’
বিরোধী নেতাদের সেই ক্ষোভকেই আজ উস্কে দিয়েছেন জার্মানির অলটারনেটিভ দলের নেতা ফেস্ট। জার্মানির হামবুর্গের বাসিন্দা ফেস্ট নিজের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন আইনজীবী হিসাবে। ১৯৯৯ সালে সাংবাদিক হিসাবে কাজ শুরু করেন। ২০১৬ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ। চলতি বছরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হন ফেস্ট। ঘটনাচক্রে কাশ্মীর প্রসঙ্গে ফেস্ট যা বলেছেন, ওই কথাগুলিই গত ক’দিন ধরে বলে আসছেন বিরোধীরা। ফেস্টের বক্তব্য নিয়ে চুপ সরকার পক্ষ। তবে স্থানীয়দের বিক্ষোভ, জঙ্গি হামলা এবং আজ ফেস্টের ওই উল্টো সুরের পরে ওই সফরে কী লাভ হল, সে প্রশ্ন উঠেছে সরকারের অন্দরমহলেই।