ইঞ্জিনিয়ার রশিদ। —ফাইল চিত্র
কাশ্মীরের জেলবন্দি সাংসদ আব্দুল রশিদ শেখ ওরফে ইঞ্জিনিয়ার রশিদকে শপথ নেওয়ার অনুমতি দিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। লোকসভা নির্বাচনে উত্তর কাশ্মীরের বারামুলা কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জিতে চমক দেখিয়েছেন রশিদ। নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়তে নেমে হারিয়ে দিয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) নেতা তথা জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাকে।
কিন্তু জিতেও এখনও পর্যন্ত সাংসদ হিসাবে শপথ নিতে পারেননি রশিদ। কারণ, ২০১৯ সাল থেকে তিনি এনআইএ-র মামলায় দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে অর্থ সাহায্য করার অভিযোগ রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা হিসাবে এনআইএ সোমবার জানায়, রশিদের শপথ নেওয়ার বিষয়ে তাদের কোনও আপত্তি নেই। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লির একটি নিম্ন আদালত। আদালতের তরফে অনুমতি মিললে অন্য সাংসদদের মতোই সংসদে গিয়ে শপথ নিতে পারবেন রশিদ।
এর আগে সাংসদ হিসাবে শপথ নিতে চেয়ে আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন রশিদ। গত শনিবার দিল্লির অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক কিরণ গুপ্ত এনআইএ-কে এই বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেন। আদালত এ-ও জানায় যে, আগামী সোমবারের মধ্যে এনআইএ-কে নিজেদের অবস্থান জানাতে হবে। সেই মতোই সোমবার এনআইএ জানাল, সাংসদ হিসাবে শপথ নিতে পারেন রশিদ।
আদালতের সওয়াল পর্বে রশিদের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলকে মানুষ বিপুল ভোটে জয়ী করেছেন। মানুষ রশিদকে ভালবাসেন। তাই তাঁকে সংসদে মানুষের অধিকার নিয়ে সরব হওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। প্রসঙ্গত, ওমরকে ২ লক্ষেরও বেশি ভোটে হারিয়েছেন রশিদ। এর আগে আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহকে জেল থেকে সংসদে গিয়ে শপথ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল আদালত। এই লোকসভা নির্বাচনেই পঞ্জাবের খাদুর সাহিব কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অমৃতপাল সিংহ। কিন্তু বর্তমানে জাতীয় সুরক্ষা আইনে অসমের ডিব্রুগড়ের একটি জেলে বন্দি তিনি। তিনিও এখনও শপথ নিতে পারেননি।
এ ক্ষেত্রে তদন্তকারী সংস্থার আপত্তি না থাকলে আর আদালত অনুমতি দিলে শপথ নিতে পারেন বিচারাধীন জেলবন্দি সাংসদেরা। তবে শপথগ্রহণের পর লোকসভার স্পিকারকে এই প্রার্থীদের লিখিত ভাবে জানাতে হবে, তাঁরা সংসদে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। অনুপস্থিত হিসাবে তাঁরা সংসদের সদস্য থাকতে পারেন কি না, ভোটাভুটির মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তবে কোনও অপরাধে জয়ী প্রার্থীরা দোষী সাব্যস্ত হলে এবং তাঁদের দু’বছর বা তার বেশি দিনের জেল হলে সঙ্গে সঙ্গে সাংসদ পদ খোয়াতে হবে তাঁদের। অমৃতপাল এবং রশিদের ক্ষেত্রে কী হয়, তা অবশ্য ভবিষ্যতই বলবে।