পহেলগাওঁয়ের বৈসনর উপত্যকায় জঙ্গিদের হত্যালীলার পর দোকানের সামনে পড়ে থাকা খালি চেয়ার। —ফাইল চিত্র।
পহেলগাঁওয়ের বৈসনর উপত্যকায় হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। সূত্রের খবর, তদন্তে উঠে এসেছে, ঘটনার দিন বৈসনরে একটি খাবারের দোকানের পিছনে লুকিয়ে ছিল দু’জন জঙ্গি। প্রত্যক্ষদর্শী এবং নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, পর্যটকদের আসার জন্য অপেক্ষা করছিল তারা। পর্যটকেরা ওই দোকানে খেতে যেতেই উঠে দাঁড়ায় ওই দুই জঙ্গি। পর্যটকদের ধর্ম জানতে চায় তারা। পর ক্ষণেই এক মিনিটের মধ্যে চার জনকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। তার পর জঙ্গিদের গুলিতে একে একে ২৬ জনের মৃত্যু হয়।
গত মঙ্গলবার জঙ্গিরা যে কোনও এলোপাথাড়ি গুলি চালায়নি, সে বিষয়েও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। লক্ষ্য নিশ্চিত করে হত্যালীলা চালানো হয়েছে বলে পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অনুমান করছেন এনআইএ আধিকারিকেরা।
গত মঙ্গলবার পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকে এক সপ্তাহ অতিক্রান্ত হতে চলল। কিন্তু হামলাকারী জঙ্গিরা এখনও পর্যন্ত কেউ-ই ধরা পড়েননি। এক দিকে যেমন জঙ্গিদের খোঁজে কাশ্মীর জুড়ে অভিযান চলছে, তেমনই নিহতদের পরিবার এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেছে এনআইএ। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা অনুমান করছিলেন, পাহাড়ের উঁচু অঞ্চল থেকে নেমে এসে অতর্কিতে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেছিল জঙ্গিরা। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে পাওয়া বয়ানে তদন্তকারী সংস্থার অনুমান, এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয়নি সেখানে। লক্ষ্য নির্দিষ্ট করার পরেই গুলি চালিয়েছিল জঙ্গিরা।
সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ় ১৮’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, একটি গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে, হামলার দু’সপ্তাহ আগেই পহেলগাঁওয়ের বেশ কিছু হোটেলে রেকি করা হয়েছিল। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই ওই রেকি হয়েছিল। যদিও তদন্তকারী সংস্থার তরফে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু মন্তব্য করা হয়নি। বস্তুত, তদন্ত শুরুর পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিবরণ সংগ্রহ করতে শুরু করেছে এনআইএ। পহেলগাঁও কাণ্ডে তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন বৈসরন উপত্যকার এক ‘জ়িপলাইন অপারেটর’ও। হামলায় তাঁর পরোক্ষ কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ওই জ়িপলাইন অপারেটরকে ফের তলব করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।