ধুমধাম করে বিয়ের পর ভেবেছিলেন। স্বপ্নপূরণ হয়। কিন্তু, প্রথম রাতেই তা বদলে গেল দুঃস্বপ্নে। স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক অক্ষমতার অভিযোগ তুলে, মারধর আর ছুরির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত ওই তরুণী এখন আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউ-তে ভর্তি।
অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলার ঘটনা। স্ত্রীর উপর শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগে শনিবার ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে আপাতত জেল হেফাজতে রয়েছেন তিনি।
গত শুক্রবার চিত্তুর জেলার বাসিন্দা শৈলজার সঙ্গে প্রকাশ রেড্ডির বিয়ে হয়েছিল। শৈলজা ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। আর প্রকাশ পেশায় স্কুলশিক্ষক। মেয়ের মা-বাবা জানিয়েছেন, বেশ জাঁকজমক করেই বিয়ে হয়েছিল তাঁদের মেয়ের। বিয়েতে ১ কোটি টাকা পণও দিয়েছিলেন তাঁরা। বিয়ের অনুষ্ঠান তাঁদের বাড়িতে হয়নি। অনুষ্ঠান শেষে শৈলজাদের বাড়িতে এসেছিলেন প্রকাশ।
আরও পড়ুন
অযোধ্যা মামলার চূড়ান্ত শুনানি শুরু হল
কিন্তু, রাতেই মেয়ের চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায় তাঁদের। মেয়ে-জামাইয়ের ঘরের দরজা অনেক বার ধাক্কাধাক্কি করলেও তাঁরা তা খোলেননি। এর পর দরজা ভেঙে ফেলা হয়। শৈলজার বাবা-মা জানিয়েছেন, দরজা ভেঙে তাঁরা দেখেন মারের চোটে শৈলজার চোখ-মুখ ফুলে গিয়েছে। তখনই তাঁদের কাছে মেয়ে অভিযোগ করেন, ‘‘প্রকাশ শারীরিক ভাবে অক্ষম।’’ এর পরেই তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় এক সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
আরও পড়ুন
দুধের শিশুকে খুন করে মা ওয়াশিং মেশিনে ঢোকালেন!
এর পর প্রকাশের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে শৈলজার পরিবার। গঙ্গাধর নেল্লোর থানার সাব-ইন্সপেক্টর জি রাজাশেখর বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বিয়ের প্রথম রাতেই শৈলজা বুঝতে পেরেছিলেন প্রকাশ শারীরিক ভাবে অক্ষম। বিষয়টি নিজের পরিবার তো বটেই শ্বশুর-শাশুড়িকেও জানাতে বারণ করেন প্রকাশ। কিন্তু, তাতে রাজি হননি শৈলজা। এর পরই তাঁকে এলোপাথাড়ি মারধর করতে শুরু করেন প্রকাশ। এমনকী, শৈলজাকে ছুরি দিয়েও আঘাত করেন তিনি।”
আরও পড়ুন
স্মার্টফোন সোয়াইপ করার ধরনই বলে দেয় আপনার ব্যক্তিত্ব
পুলিশের কাছে বয়ানে শৈলজার দাবি, “প্রথমে আমার মুখে ঘুঁষি মারে প্রকাশ। এর পর আমাকে লাথি মারতে থাকে। এতেও থামেনি! একটা ছুরি দিয়ে সারা শরীরে বার বার আঘাত করতে থাকে প্রকাশ।’’ ঘটনার কথা জানাজানি হতেই সরকারি স্কুলের শিক্ষক প্রকাশকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন চিত্তুরের জেলাশাসক। শৈলজার মা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তা ছাড়া, এখনও এই মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, প্রকাশ শারীরিক ভাবে অক্ষম কি না, তা মেডিক্যাল টেস্টের পরে জানা যাবে।