দিল্লি হত্যাকাণ্ডে রহস্যের পর্দা উঠতে চলেছে? ফাইল চিত্র।
শ্রদ্ধা ওয়ালকার খুনের তদন্তে নেমে এ বার দক্ষিণ দিল্লির মেহরৌলীর জঙ্গল থেকে একটি খুলির একাংশ উদ্ধার করল পুলিশ। তবে এটি শ্রদ্ধারই খুলি কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। অন্য দেহাংশগুলির সন্ধানে ওই জঙ্গলে এবং ময়দান গড়হী পুকুরে তল্লাশি চালায় পুলিশ।
এ ছাড়াও পুলিশের একটি দল শ্রদ্ধা-আফতাবের ছতরপুরের ফ্ল্যাটে গিয়ে তল্লাশি চালায়। সেখানে গিয়ে তারা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে। ওই ফ্ল্যাট থেকে দু’টি প্লাস্টিকের ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের অনুমান, এই প্যাকেটগুলিতে শ্রদ্ধার দেহাংশ ভরে সেগুলিকে মধ্যরাতে শহরের নানা প্রান্তে ফেলে দিয়ে আসতেন আফতাব।
পুলিশের নজরে রয়েছে মুম্বইয়ের একটি কুরিয়ার সংস্থাও। ‘গুডলাক প্যাকার্স অ্যান্ড মুভার্স’ নামক ওই সংস্থার মাধ্যমেই আফতাব গত মে মাসে তাঁর যাবতীয় সামগ্রী দিল্লিতে নিয়ে এসেছিলেন। কুরিয়ার সংস্থার মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, মোট ৩৭টি বাক্স করে জিনিস নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
তবে আফতাবের পরিবার এখন কোথায় রয়েছে, তা জানা যায়নি। জানা গিয়েছে, দীপাবলির সময় মহারাষ্ট্রের ভাসাইতে মীরা রোড এলাকায় একটি আবাসনে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু আফতাবের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই পরিবারের কাউকে আর দেখা যায়নি। ওই আবাসনের অন্য বাসিন্দাদের দাবি, আফতাবের সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য সামনে আসার পরেই কার্যত অবসাদে ভুগছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
অভিযোগ, গত ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলিতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুন করেন আফতাব। এর পর নাকি আমেরিকার এক ওয়েব সিরিজ় থেকে ‘অনুপ্রেরণা’ নিয়ে শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে ফেলেন আফতাব। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে কিনে আনা হয় নতুন ফ্রিজ। এর পর ১৮ দিন ধরে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসেন অভিযুক্ত আফতাব।
সন্দেহ এড়াতে আফতাব রোজ রাত ২টো নাগাদ একটি পলিব্যাগে করে শ্রদ্ধার দেহের টুকরো নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতেন বলেও পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে। শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করার পর দিল্লি পুলিশ গত শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করে। তখন থেকেই শুরু হয়েছে বিস্তারিত তদন্ত।