— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সমকামী যৌন সম্পর্ক ‘অস্বাভাবিক অপরাধ’! এ বার এমনটাই জানিয়ে দিল স্নাতক স্তরের ডাক্তারি পড়ুয়াদের নয়া পাঠ্যবই। সদ্য প্রকাশিত হয়েছে স্নাতক স্তরের ডাক্তারি পড়ুয়াদের জন্য জাতীয় চিকিৎসা কমিশনের (এনএমসি) প্রবর্তিত পাঠ্য বইয়ের নয়া ও সর্বশেষ সংস্করণ। আর সেই সংশোধিত পাঠ্যক্রমেই উল্লেখ রয়েছে, সমকামী যৌন সম্পর্ক অস্বাভাবিক অপরাধ। বইতে আলোচনা হয়েছে যৌন বিকৃতি এবং ফেটিশিজ়ম নিয়েও। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এই সংশোধনগুলি হয়েছে স্নাতক স্তরের পড়ুয়াদের ফরেন্সিক মেডিসিন এবং টক্সিকোলজির পাঠ্যপুস্তকে। ২০২২ সালে মাদ্রাজ হাই কোর্টের নির্দেশে এই বিষয়গুলি পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, সংশোধিত এই পাঠ্যক্রমে আলোচনা হয়েছে হাইমেনের ধরণ, আইনি ক্ষেত্রে কুমারীত্ব নির্ণয়ে হাইমেন পরীক্ষার ভূমিকা এবং সেই পরীক্ষার বৈধতা নিয়েও।
তবে বিতর্কের শুরু মূলত ‘অস্বাভাবিক অপরাধ’-এর তালিকায় যৌন বিকৃতি, ফেটিশিজ়ম এবং মৃতদেহের প্রতি যৌন আকর্ষণের (নেক্রোফিলিয়া) পাশাপাশি সমকামী যৌন সম্পর্ককে রাখায়। সম্পূর্ণ বাদ গিয়েছে দুই ব্যক্তির মধ্যে সম্মতিমূলক সমকামী সম্পর্কের বিষয়টিও। অর্থাৎ, ডাক্তারি পড়ুয়াদের নয়া বই বলছে, দুই সমলিঙ্গের মানুষের মধ্যে সম্মতিমূলক যৌন সম্পর্কও অস্বাভাবিক অপরাধের সামিল!
কমিশনের যুক্তি, চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিশ্বব্যাপী পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই পাঠ্যপুস্তকে এই বদল আনা হয়েছে। এনএমসির নয়া পাঠ্যক্রম নির্দেশিকায় দাবি করা হয়েছে, ‘‘সংশোধিত পাঠ্যক্রমটি নানা দিক পুনর্বিবেচনার পরেই আনা হয়েছে। ভারতের জনমানস, আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটকে বোঝা এবং সেই সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের মূল্যবোধ তথা সার্বিক শিক্ষাই এই পাঠ্যক্রমের উদ্দেশ্য।’’ যদিও এ সব যুক্তি মানছেন না সমালোচকেরা। তাঁরা বলছেন, এ ধরনের লেখা প্রান্তিক যৌনতার মানুষদের প্রতি বিদ্বেষ আরও উস্কে দেবে। নয়া পাঠ্যপুস্তক প্রকাশের পরেই তাই নানা মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সরব হয়েছেন কুইয়্যার অধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ।