ছবি: এএফপি।
আইনে বদল এনে জম্মু-কাশ্মীরে সব ভারতীয়কে জমি কেনার অধিকার দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। জম্মু-কাশ্মীরকে ‘বেচার ব্যবস্থা’ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে উপত্যকার রাজনৈতিক দলগুলি। অন্য দিকে বিজেপির দাবি, এতে উন্নয়নের জোয়ার আসবে।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের আগে কেবল সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ‘স্থায়ী বাসিন্দা’রাই জম্মু-কাশ্মীরে স্থাবর সম্পত্তি কিনতে পারতেন। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কয়েকটি আইন পরিবর্তন করে সব ভারতীয়কেই সেই অধিকার দিয়েছে। স্থাবর সম্পত্তি নিয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘জম্মু-কাশ্মীর উন্নয়ন’ আইনের ১৭ নম্বর ধারা প্রযোজ্য। সেই ধারায় ‘স্থায়ী বাসিন্দা’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিন্হা জানান, কৃষি জমি কৃষক ভিন্ন অন্যদের হাতে তুলে দেওয়া হবে না। কিন্তু হাসপাতাল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়তে প্রয়োজনে কৃষিজমি ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে নয়া আইনে।
জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল মহম্মদ ইশাক কাদরির মতে, ‘‘এখন বহিরাগতদের জম্মু-কাশ্মীরে জমি কেনার ক্ষেত্রে কোনও বাধা রইল না।’’
ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার মতে, ‘‘অন্য রাজ্যে বাসিন্দাদের অধিকার রক্ষায় যেটুকু ব্যবস্থা নেওয়া হয় তা-ও এ ক্ষেত্রে নেওয়া হয়নি। কেন্দ্র জম্মু-কাশ্মীরকে বেচতে চাইছে।’’ পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির মতে, কেন্দ্র ফের জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে পদক্ষেপ করল।
সম্প্রতি লাদাখের পার্বত্য উন্নয়ন পরিষদের ২৬টি আসনের মধ্যে ১৫টি পেয়েছে বিজেপি। ওমর বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত ওই নির্বাচনের আগে এই ঘোষণা হলে বিজেপি একটিও আসন পেত না। ওরা তাই পিছনের দরজা দিয়ে এই পদক্ষেপ করল। এতে জম্মু, কাশ্মীর, লাদাখের বাসিন্দাদের সম্মতি নেওয়া প্রয়োজন ছিল। আমরা এখনও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যেই আছি। একনায়কতন্ত্র চলছে না।’’ তবে কেন্দ্রের তরফে পরে ব্যাখ্যায় জানানো হয়েছে, এই আইন পরিবর্তন লাদাখের ক্ষেত্রে কার্যকর করা হবে না।
বিজেপি নেতা কবীন্দ্র গুপ্তের মতে, ‘‘আইন পরিবর্তনের ফলে জম্মু-কাশ্মীরে উন্নয়নের জোয়ার আসবে। ৭০ বছর ধরে কংবগ্রেস ও আঞ্চলিক দলগুলির নীতির জন্য এই সুযোগ থেকে জম্মু-কাশ্মীর বঞ্চিত হয়েছে।’’
নয়া আইন অনুযায়ী, জম্মু-কাশ্মীরের যে কোনও অংশকে ‘কৌশলগত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করতে সেনার কোর কমান্ডার বা তার চেয়ে উচ্চপদস্থ অফিসারকে অনুরোধ করতে পারবে প্রশাসন।