ঘন কুয়াশায় ব্যাহত ট্রেন পরিষেবা। ছবি: পিটিআই।
উত্তর ভারত যাওয়া-আসার বেশির ভাগ দূরপাল্লার ট্রেনই দেরিতে চলছে। কোনওটি পাঁচ ঘণ্টা, কোনওটি সাত ঘণ্টা, কোনওটি আবার ২৪ ঘণ্টারও বেশি দেরিতে চলছে। কিন্তু সে সব কিছুকে ছাপিয়ে গেল দিল্লি-শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেস। দিল্লি থেকে ছেড়ে নির্ধারিত সময়ের ২৮ ঘণ্টা পর ট্রেন পৌঁছল শিয়ালদহে।
দিল্লি থেকে শিয়ালদহে আসতে মাঝে ছ’টি স্টেশনে দাঁড়ায় ১২৩১৪ ডাউন শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেস। নয়াদিল্লি স্টেশন ছাড়ার পর প্রথম দাঁড়ায় কানপুর সেন্ট্রালে। তার পর পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশন, গয়া জংশন, ধানবাদ জংশন, আসানসোল জংশন, দুর্গাপুরে থামে এই ট্রেন। তার পর শিয়ালদহ।
নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেস ছাড়ার সময় বিকেল সাড়ে ৪টে। অন্যান্য দিনের মতো ২৪ জানুয়ারিতেও নির্ধারিত সময়েই ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল। ইন্ডিয়ারেলইনফো ডট কমের তথ্য অনুযায়ী, সেই ট্রেন বিকেল সাড়ে ৪টের পরিবর্তে রাত ২টো ১৮ মিনিটে নয়াদিল্লি স্টেশন ছেড়ে রওনা হয়। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের প্রায় ১০ ঘণ্টা দেরিতে নয়াদিল্লি থেকে রওনা হয় ট্রেনটি। ২৫ জানুয়ারি সকাল ১০টা ১০ মিনিটে শিয়ালদহে ঢোকার নির্ধারিত সময় ছিল। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে গিয়ে ২৬ জানুয়ারি দুপুর ২টো ৬ মিনিটে শিয়ালদহে ঢোকে রাজধানী। ১৭ ঘণ্টায় নয়াদিল্লি থেকে শিয়ালদহে পৌঁছনোর কথা ট্রেনটির। কিন্তু তার পরিবর্তে শিয়ালদহে পৌঁছতে তার সময় লেগেছে সব মিলিয়ে ৩৬ ঘণ্টারও বেশি।
১২৩০২ ডাউন নয়াদিল্লি-হাওড়া রাজধানী এক্সপ্রেসও প্রায় ২৫ ঘণ্টা দেরিতে হাওড়া পৌঁছেছে। ২৪ জানুয়ারি বিকেল ৪টে ৫০ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল ট্রেনটির। ২৫ জানুয়ারি সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু ইন্ডিয়ারেলইনফো ডট কমের তথ্য বলছে, ওই দিন রাত ২টো ৪ মিনিটে নয়াদিল্লি ছাড়ে ট্রেনটি। ২৬ জানুয়ারি সকাল ১১টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি হাওড়া পৌঁছয়। এ ব্যাপারে পূর্ব রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষ ফোন ধরেননি।
শুধু এই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনই নয়, দিল্লিগামী এবং দিল্লি থেকে যে সব দূরপাল্লার ট্রেন চলছে, সবক’টিই দেরিতে চলছে। তার কারণ হল কুয়াশা। গত দু’সপ্তাহ ধরে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ-সহ উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে ঘন কুয়াশার দাপট চলছে। তার জেরে প্রতি দিনই দূরপাল্লার ট্রেন দেরিতে চলছে। দুই রাজধানী এক্সপ্রেসের গতিও সে কারণে শ্লথ হচ্ছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের। শুধু রেল পরিষেবাই নয়, বিমান এবং সড়ক পরিষেবাও গত দু’সপ্তাহ ধরে কুয়াশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে।কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা খুবই নেমে যাওয়ায় শুক্রবারও দিল্লি থেকে একশোরও বেশি ট্রেন দেরিতে চলছে। মহাবোধী এক্সপ্রেস এবং ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস বৃহস্পতিবার ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই ট্রেন এক দিন পর অর্থাৎ শুক্রবার নয়াদিল্লি থেকে রওনা হয়েছে।